পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৪
গল্প-দশক।

 এইরূপে শশি যখন একেবারে মহারাণীর নিকট দরবার করিয়া তাহার পিস্‌তুতো দেবরকে সম্পূর্ণ জব্দ করিয়া দিবার উপায় চিন্তা করিতেছে তখন হঠাৎ নীলমণির জ্বর আসিয়া আক্ষেপসহকারে মূর্চ্ছা হইতে লাগিল।

 জয়গোপাল এক গ্রাম্য নেটিভ ডাক্তারকে ডাকিল। শশি ভাল ডাক্তারের জন্য অনুরোধ করাতে জয়গোপাল বলিল,কেন মতিলাল মন্দ ডাক্তার কি!

 শশি তখন তাঁহার পায়ে পড়িল, মাথার দিব্য দিল; জয় গোপাল বলিল, আচ্ছা সহর হইতে ডাক্তার ডাকিতে পাঠাইতেছি।

 শশি নীলমণিকে কোলে করিয়া বুকে করিয়া পড়িয়া রহিল। নীলমণিও তাহাকে এক দণ্ড চোখের আড়াল হইতে দেয় না; পাছে ফাঁকি দিয়া পালায় এই ভয়ে তাহাকে জড়াইয়া থাকে। এমন কি, ঘুমাইয়া পড়িলেও আঁচলটি ছাড়ে না।

 সমস্ত দিন এমনি ভাবে কাটলে সন্ধ্যার পর জয়গোপাল আসিয়া বলিল—সহরে ডাক্তার বাবুকে পাওয়া গেল না, তিনি দূরে কোথায় রোগী দেখিতে গিয়াছেন। ইহাও বলিল, মকদ্দমা উপলক্ষে আমাকে আজই অন্যত্র যাইতে হইতেছে; আমি মতিলালকে বলিয়া গেলাম সে নিয়মিত আসিয়া রোগী দেখিয়া যাইবে।

 রাত্রে নীলমণি ঘুমের ঘোরে প্রলাপ বকিল। প্রাতঃকালেই শশি কিছুমাত্র বিচার না করিয়া রোগী ভ্রাতাকে লইয়া নৌকা