পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
দিদি।
৯৫

চড়িয়া একবারে সহরে গিয়া ডাক্তারের বাড়ি উপস্থিত হইল। ভাক্তার বাড়িতে আছেন—সহর ছাড়িয়া কোথাও যান নাই। ভদ্র স্ত্রীলোক দেখিয়া তিনি তাড়াতাড়ি বাসা ঠিক করিয়া একটি প্রাচীনা বিধবার তত্ত্বাবধানে শশিকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া দিলেন এবং ছেলেটির চিকিৎসা আরম্ভ করিলেন।

 পরদিনই জয়গোপাল আসিয়া উপস্থিত। ক্রোধে অগ্নিমূর্ত্তি হইয়া স্ত্রীকে তৎক্ষণাৎ তাহার সহিত ফিরিতে অনুমতি করিল।

 স্ত্রী কহিল, আমাকে যদি কাটিয়া ফেল তবু আমি এখন ফিরিব না। তোমরা আমার নীলমণিকে মারিয়া ফেলিতে চাও—উহায় মা নাই, বাপ নাই, আমি ছাড়া উহার আর কেহ নাই—আমি উহাকে রক্ষা করিব।

 জয়গোপাল রাগিয়া কহিল, তবে এই খানেই থাক, তুমি আর আমার ঘরে ফিরিয়ো না।

 শশি তখন প্রদীপ্ত হইয়া উঠিয়া কহিল ঘর তোমার কি? আমার ভাইয়েরই ত ঘর!

 জয়গোপাল কহিল—আচ্ছা সে দেখা যাইবে!

 পাড়ার লোকে এই ঘটনায় কিছুদিন খুব আন্দোলন করিতে লাগিল। প্রতিবেশিনী তারা কহিল, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করিতে হয় ঘরে বসিয়া কর না বাপু। ঘর ছাড়িয়া যাইবার আবশ্যক কি! হাজার হৌক্‌ স্বামী ত বটে।

 সঙ্গে যাহা টাকা ছিল সমস্ত খরচ করিয়া গহনাপত্র বেচিয়া শশি তাহার ভাইকে মৃত্যুমুখ হইতে রক্ষা করিল। তখন সে