পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রায়শ্চিত্ত।

তাঁহার স্বামীরও কোন সন্দেহ ছিল না এবং সাধারণের ধারণাও এই বিশ্বাসের অনুকূল ছিল।

 এই স্বামিগর্ব্ব পাছে কিছু মাত্র ক্ষুণ্ণ হয়, এজন্য বিন্ধ্যবাসিনী সর্ব্বদাই সশঙ্কিত ছিলেন। তিনি যদি আপন হৃদয়ের অভ্রভেদী অটল ভক্তিপর্ব্বতের উচ্চতম শিখরের উপরে এই স্বামীটিকে অধিরোহণ করাইয়া তাঁহাকে মূঢ় মর্ত্যলোকের সমস্ত কটাক্ষপাত হইতে দূরে রক্ষা করিতে পারিতেন, তবে নিশ্চিন্তচিত্তে পতিপূজায় জীবন উৎসর্গ করিতেন। কিন্তু জড়জগতে কেবলমাত্র ভক্তির দ্বারা ভক্তিভাজনকে উর্দ্ধে তুলিয়া রাখা যায় না এবং অনাথবন্ধুকেও পুরুষের আদর্শ বলিয়া মানে না এমন প্রাণী সংসারে বিরল নহে। এই জন্য বিন্ধ্যবাসিনীকে অনেক দুঃখ পাইতে হইয়াছে।

 অনাথবন্ধু যখন কালেজে পড়িতেন তখন শ্বশুরালয়েই বাস করিতেন। পরীক্ষার সময় আসিল পরীক্ষা দিলেন না এবং তাহার পরবৎসর কালেজ ছাড়িয়া দিলেন।

 এই ঘটনায় সর্ব্বসাধারণের সমক্ষে বিন্ধীবাসিনী অত্যন্ত কুণ্ঠিত হইয়া পড়িলেন। রাত্রে মৃদুস্বরে অনাথবন্ধুকে বলিলেন, “পরীক্ষাটা দিলেই ভাল হ’ত!”

 অনাথবন্ধু অবজ্ঞাভরে হাসিয়া কহিলেন, “পরীক্ষা দিলেই কি চতুর্ভুজ হয় না কি? আমাদের কেদারও ত পরীক্ষায় পাস্‌ হইয়াছে।”

 বিন্ধ্যবাসিনী সান্ত্বনা লাভ করিলেন। দেশের অনেক