পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রতিহিংসা।
১৪৫

করিতে লাগিল;—কণ্ঠী এবং বাজুবন্দের প্রশংসা করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “হাঁ ভাই, এ কি গিণ্টিকরা?”

 ইন্দ্রাণী পরম গম্ভীর মুখে কহিল, “না, এ পিতলের!”

 নয়নতারা ইন্দ্রাণীকে সম্বোধন করিয়া কহিল, “ওগো, তুমি ওখানে এক্‌লা দাঁড়িয়ে কি কর্‌চ, এই খাবারগুলো হাটখোলার পাল্কীতে তুলে দিয়ে এস না।” অদূরে বাড়ির দাসী উপস্থিত ছিল।

 ইন্দ্রাণী কেবল মুহূর্ত্তকালের জন্য তাহার বিপুলপক্ষ্মছায়াগভীর উদার দৃষ্টি মেলিয়া নয়নতারার মুখের দিকে চাহিল এবং পরক্ষণেই নীরবে মিষ্টান্নপূর্ণ সরা খুরি তুলিয়া লইয়া হাটখোলার পাল্কীর উদ্দেশে নীচে চলিল।

 যিনি এই মিষ্টান্ন উপহার প্রাপ্ত হইয়াছেন তিনি শশব্যস্ত হইয়া কহিলেন, “তুমি কেন ভাই কষ্ট কর্‌চ, দাও না ঐ দাসীর হাতে দাও!”

 ইন্দ্রাণী তাহাতে সম্মত না হইয়া কহিলেন, “এতে আর কষ্ট কিসের!”

 অপরা কহিলেন, “তবে ভাই আমার হাতে দাও!”

 ইন্দ্রাণী কহিলেন, “না, আমিই নিয়ে যাচ্চি।”

 বলিয়া, অন্নপূর্ণা যেমন স্নিগ্ধগম্ভীর মুখে সমুচ্চ স্নেহে ভক্তকে স্বহস্তে অন্ন তুলিয়া দিতে পারিতেন, তেমনি অটলস্নিগ্ধভাবে তিনি পাল্কীতে মিষ্টান্ন রাখিয়া আসিলেন এবং সেই দুই মিনিটকালের সংস্রবে হাটখোলাবাসিনী ধনিগৃহ-বধু

১৩