পথিক আমি, পথেই বাসা—
আমার যেমন যাওয়া তেমনি আসা।
ভোরের আলোয় আমার তারা
হোক-না হারা,
আবার জ্বলবে সাঁজে আঁধার-মাঝে তারি নীরব চাওয়া।
১৭৩
কেন আমায় পাগল করে যাস ওরে চলে-যাওয়ার দল।
আকাশে বয় বাতাস উদাস, পরান টলোমল।
প্রভাততারা দিশাহারা, শরতমেঘের ক্ষণিক ধারা—
সভা ভাঙার শেষ বীণাতে তান লাগে চঞ্চল।
নাগকেশরের ঝরা কেশর ধুলার সাথে মিতা।
গোধুলি সে রক্ত-আলোয় জ্বালে আপন চিতা।
শীতের হাওয়ায় ঝরায় পাতা, আম্লকীবন মরণ-মাতা,
বিদায়বাঁশির সুরে বিধুর সাঁজের দিগঞ্চল।
১৭৪
যদি হল যাবার ক্ষণ
তবে যাও দিয়ে যাও শেষের পরশন।
বারে বারে যেথায় আপন গানে বপন ভাসাই দূরের পানে
মাঝে মাঝে দেখে যেয়ো শূন্য বাতায়ন—
সে মোর শূন্য বাতায়ন।
বনের প্রান্তে ওই মালতীলতা
করুণ গন্ধে কয় কী গোপন কথা।
ওরই ডালে আর শ্রাবণের পাখি স্মরণখানি আনবে না কি,
আজ-শ্রাবণের সজল ছায়ায় বিরহ মিলন—
আমাদের বিরহ মিলন।