সেই অবস্থায় জোর করিলে তাহার অপকার ভিন্ন উপকারের সম্ভাবনা নাই। প্রথম প্রথম সে চিৎকার করিয়াছিল কিন্তু পরে দেখিল চিৎকার করিতে গিয়া হিতের পরিবর্ত্তে তাহার বিপরীত ফল ফলিতে আরম্ভ করিল। উহাদিগের মধ্যে একজন বলিয়া উঠিল যদি ও চিৎকার করিবার চেষ্টা করে তাহা হইলে উহার মুখের ভিতর একখানি বস্ত্র প্রবিষ্ট করাইয়া দেও। এই কথা শুনিয়া ঐ স্ত্রীলোকটী আর কোনরূপ কথা বলিতে সাহসী হইল না। সেই স্থানে বসিয়া বসিয়াই মনের দুঃখে কষ্টে ও যন্ত্রণায় কেবল অশ্রুজল বিসর্জ্জন করিয়া আপনার বুক ভাসাইতে লাগিল। ঐ স্ত্রীলোকটী যে কে কেনই বা সে ঐ স্থানে আসিল ও কি নিমিত্তই বা তাহার উপর এইরূপ অত্যাচার হইতেছে তাহার কিছুমাত্র আমি অনুমান করিয়া উঠিতে পারিলাম না। সেই সময় দেখিলাম আর একটী লোক সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল, তাহাকে দেখিয়া অপরাপর ব্যক্তিগণ যেন একটু জড়সড় হইয়া পড়িল। সেই ব্যক্তি উহাদিগকে গালি দিতে আরম্ভ করিল ও কহিল “এই নিঃসহায় স্ত্রীলোকটীর উপর তোরা এরূপ অত্যাচার করিতেছিস কেন? সামান্য স্ত্রীলোকের উপর অত্যাচার করিয়া তোদের কি লাভ হইতেছে?” এই বলিয়া ঐ স্ত্রীলোকটীর দিকে লক্ষ্য করিয়া কহিল—“তোমার দেখিতেছি বড়ই কষ্ট হইয়াছে, ও পিপসায় তোমার মুখ শুখাইয়া গিয়াছে। জল আনিয়া আমি তোমাকে দিতেছি, পান করিয়া একটু সুস্থ হও, তাহার পর আমি তোমাকে তোমার স্থানে পাঠাইয়া দিব। এই বলিয়া এক গ্লাস জল আনিয়া সে ঐ স্ত্রীলোকটীর হস্তে প্রদান করিল। স্ত্রীলোকটী প্রকৃতই অতিশয় তৃষাতুরা হইয়া পড়িয়াছিল। জলপূর্ণ
পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুপ্ত-রহস্য।
১৯