পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ১৩৪ সংখ্যা।

কেহই তারামণিকে দেখিতে পায় নাই। ইহার পর যদি ঐ মৃত দেহ গলিত ভাবে সিন্ধুক হইতে বহির্গত হয় তাহা হইলে নিশ্চয়ই সকলকে ভাবিতে হইবে যে ঐ মৃত দেহ তারামণির, আর তারামণির গৃহে সিঁদ দিয়া তাহার যথা সর্ব্বস্ব অর্পণ, ও তাহাকে হত্যা করা অপরাধে যদি আমরা কেহ ধৃতই হই তাহা হইলে তারামণির অস্তিত্ব প্রমাণ করিতে পারিলে কোন বিচারকই আমাদিগকে কোনরূপ দণ্ড প্রদানে সমর্থ হইবেন না। মনে মনে এই অভিসন্ধি স্থির করিয়াই ঐ মৃত দেহটাকে তারামণির লোহার সিন্ধুকের ভিতর আমরা আবদ্ধ করিয়া রাখিয়া আসিয়াছি।

 প্রথম ব্যক্তি। তোমরা যে অভিসন্ধি করিয়াছ, তাহা নিতান্ত মন্দ নহে কিন্তু আমাদিগকে এখন আর এই স্থানে থাকিবার প্রয়োজন কি? এই স্থান পরিত্যাগ করিয়া আপন আপন স্থানে প্রস্থান করিলে বোধ হয় এখন ভাল হয়; কারণ যে উদ্দেশ্যে আমরা এই ঘরটী লইয়াছিলাম, আমাদিগের সেই উদ্দেশ্য অনেক পরিমাণে সফলিত হইয়াছে। এখন বোধ হয় আমাদিগের এই স্থান পরিত্যাগ করাই মঙ্গল।

 দ্বিতীয় ব্যক্তি। আমি আপনার এই প্রস্তাবে সম্মত নহি। কারণ সম্প্রতি যে দুইটী কার্য্য আমাদিগের দ্বারা সম্পন্ন হইয়াছে তাহার যে অনুসন্ধান পুলিশ কর্ত্তৃক হইতেছে না তাহা নহে। কোন্ কোন্ ব্যক্তি দ্বারা এই সকল কার্য্য সম্পন্ন হইয়াছে, পুলিশ নিশ্চয়ই তাহার অনুসন্ধান করিয়া ফিরিতেছে। এই রূপ অবস্থায় আমরা যদি হঠাৎ এই গৃহ পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যাই, তাহা হইলে পুলিশ নিশ্চয়ই আমাদের উপর সন্দেহ করিবে ও আমাদিগের নাম ধাম অবগত হইতে পারিলে আমরা যে ধৃত হইব না তাহাই বা বলি কি প্রকারে।