দুই চারি দিবসের পর আরও কত দুই চারি দিবস অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, কিন্তু বেলা এখন পর্যন্তও প্রত্যাগমন করে নাই। বেলার প্রত্যাগমন করিতে বিলম্ব দেখিয়া নানা স্থানে ও নানা সাগানে উহার অনুসন্ধান করা হইয়াছে কিন্তু এ পর্যন্ত কোন স্থানে বেলার সন্ধান পাওয়া যায় নাই। যে ব্যক্তি বেলাকে সঙ্গে করিয়া লইয়া গিয়াছিল তাহাকেও সেই পর্যন্ত কেহ দেখিতে পায় নাই। উহার নিকট হইতে আরও অবগত হইলাম যে বেলার অনেকগুলি সুবর্ণ নির্মিত অলঙ্কার আছে। কয়েক বৎসর পূর্বে মদের নেশায় বিভোর করিয়া বেলার অঙ্গ হইতে অনেক গুলি সোণার অলঙ্কার কোন ব্যক্তি চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছিল। সেই সময় হইতে বেলা কিছু সতর্ক হয় তাহার সুবর্ণ নির্মিত যে সকল অলঙ্কার আছে ঠিক সেইরূপ কতকগুলি পিতলের অলঙ্কার বেলা প্রস্তুত করাইয়া তাহাতে সোণার গিণ্টী করাইয়া লয়। ঐ গহণাগুলি বেলা এরূপ ভাবে প্রস্তুত করাইয়া লইয়াছিল যে তাহা দেখিয়া পিতলের গহণা বলিয়া কেই অনুমান করিতে পারিত না। সকলেই ভাবিত যে উহা বিশুদ্ধ সুবর্ণ নির্মিত অলঙ্কার। বেলা যে সময় আপন গৃহে থাকিত কি যে সময় মদ্যাদি পান করিত না সেই সময় সে তাহার সুবর্ণ নির্মিত অলঙ্কার গুলি পরিধাম কম্বিত, আর যখন সে যথাদি পান করিয়া আমোদ প্রমোদে রত থাকিত, অথবা সে যখন কোন অপরিচিত স্থানে বা বাগানে গমন করিত তখন সে তাহার সেই কৃত্রিম অলঙ্কার গুলি ব্যবহার করিত। এবারও যখন সে সেই অপরিচিত ব্যক্তির সহিত গমন করিয়াছিল তখনও তাহার অঙ্গে দুই এক খানি সুবর্ণ অলঙ্কার ব্যতিত প্রায় সমস্তই পিতলের গহনা ছিল।
পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৩৭ সংখ্যা।