বেলা সম্বন্ধে ঐ সমস্ত বিষয় অবগত হইয়া যে প্রকোষ্ঠে বেলা বাস করিত তাহার ভিতর প্রবেশ করিলাম, দেখিলাম সোণাগাছী অঞ্চলে একটু ইজ্যৎদার বা অর্থশালী বেশ্যাগণ যেরূপ ধরণে বাস করিয়া থাকে ইহার বাসগৃহের অবস্থাও সেই রূপ। ঘরটী উত্তম রূপে সুসজ্জিভুত ও ঘরের অভ্যন্তরীণ দ্রব্যাদি যথাযথ স্থানে বিন্যস্ত। ঘরের এক প্রান্তে একটী লোহার সিন্ধুক আছে। ঐ সিন্ধুকটী দেখিয়া আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম বেলা তাহার মূল্যবান অলঙ্কার প্রভৃতি কি এই সিন্ধুকের ভিতর রাখিয়া থাকে? আমার প্রশ্নের উত্তরে জানিতে পারিলাম ঐ লোহার সিন্ধুক ব্যতিরেকে তাহার মূল্যবান দ্রব্য রাখিবার অপর কোন স্থান নাই। আরও জানিতে পারিলাম এবার যখন সে তাহার গৃহ পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে তাহার পূর্ব্বে তাহার মূল্যবান অলঙ্কারাদি ঐ সিন্ধুকের ভিতর রাখিয়া দিয়াছিল। লোহার সিন্ধুকের চাবি ও সে কখনও তাহার সঙ্গে করিয়া লইয়া যায় না; ঐ ঘরের মধ্যস্থিত একটা বাক্সের মধ্যে সে উহা বন্ধ করিয়া রাখে, কেবল ঐ বাক্সের চাবিটী তাহার সঙ্গে থাকে মাত্র।
এই সমস্ত বিষয় অবগত হইয়া আমি বেশ বুঝিতে পারিলাম এই বেলাই সেই মতিয়া বিবি। বেলার বাগানে বেড়াইবার সাধ মস্লিমের গৃহেই শেষ হইয়া গিয়াছে। পূর্ব্বে তারামণির প্রমুখাৎ অবগত হইয়াছিলাম যে মতিয়া বিবি হত হইবার পর তাহার অঙ্গস্থিত সমস্ত অলঙ্কারই অপহৃত হইয়াছিল, কিন্তু এখন যত দূর অবগত হইলাম তাহাতে সম্যক রূপে বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না যে, বেলার অঙ্গস্থিত যে সকল অলঙ্কার অপহৃত হইয়াছে তাহা মূল্যবান সোণার অলঙ্কার কি পিতলের গহনা।