বলিতে পারিব তাহা আপনাদিগের নিকট বর্ণন করিতেছি। আমার অবস্থা শুনিলে, আমি কিরূপ দুর্ব্বিপাকে পতিত হইয়াছিলাম তাহা জানিতে পারিলে, আপনারা অনায়াসেই বুঝিতে পারিবেন যে, সভ্য অধিবাসীগণ পূরিত, ও সুবিজ্ঞ রাজ কর্ম্মচারীগণের দ্বারা শাসিত এই ভারত রাজধানীর মধ্যে এখন পর্য্যন্ত কিরূপ ভয়ানক ভয়ানক কার্য্য সকল চলিতেছে। আমার কথা শুনিলে আপনারা জানিতে পারিবেন যে, এই সুসভ্য ইংরাজ রাজত্যের মধ্যে শান্তির স্রোত প্রবাহিত থাকিলেও ভয়ানক ভয়ানক অশান্তি তরঙ্গ উখিত হইয়া নিরীহ অধিবাসীগণকে সময় সময় কিরূপে আপ্লুত করিতেছে। বিচারকগণের হস্তে শাসন দণ্ড স্থাপিত থাকিলেও সময়ে সময়ে সেই দণ্ড একেবারে অকর্ম্মণ্য হইয়া প্রজাহিতের পক্ষে অন্যরূপ ধারণ করিয়া নিরীহ অধিবাসীবর্গের সর্ব্বনাশ সাধন করিতেছে। আমার চিরদিবসের বিশ্বাস ছিল যে পাপ করিলে তাহার প্রতিফল আছে, কিন্তু এখন দেখিতেছি আমার সেই বিশ্বাস ভ্রমাত্মক। আমার বিশ্বাস ছিল যে পুণ্যেরই সদা সর্ব্বদা জয় লাভ হইয়া থাকে, কিন্তু এখন দেখিতেছি পাপের জয় ক্রমে সর্ব্বব্যাপী হইয়া দাঁড়াইতেছে। আমার বিশ্বাস ছিল দুষ্কর্ম্ম করিলে তাহাকে রাজদণ্ডে দণ্ডিত হইতে হয়, কিন্তু এখন দেখিতেছি যে যে দুষ্কর্ম্মকারী তাহারই জয়লাভ হইয়া থাকে; আর যে সৎপথ অবলম্বন করিয়া নিরীহ ভাবে দিনাতিপাত করিবার চেষ্টা করে, পদে পদে তাহাকেই বিপদ সাগরে পতিত হইয়া হাবুডুবু খাইতে হয়। আগে জানিতাম সর্ব্বস্থানে নিরীহ লোক মনের সুখে দিনযাপন করিয়া থাকে, কিন্তু এখন দেখিতেছি দুষ্ট লোকেই সুখ স্বচ্ছন্দে দিনযাপন করিতে
পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬
দারোগার দপ্তর, ১৩৪ সংখ্যা।