পাতা:গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ80 গাহদাহ কি হলো ? অচলা ততোধিক বিসময়ে নিজেব প্রতি দণ্টিপাত করিয়া দেখিল, এইমাত্র ঘােম ভাঙ্গিয়া যেখানা সে তাড়াতাড়ি নিজের গায়ে জড়াইয়া লইয়া উঠিয়া আসিয়াছে, সেখােনা সমরেশের ! সবামীর প্রশ্নটা তাহাকে যেন চাবক মারিল । লহু জায় ব্যথায় তাহার মািখ বিবণ হইয়া গেল ; কিন্তু এ যে কি করিয়া ঘটিল, তাহা কোনমতেই ভাবিয়া পাইল না । তাহার স্মরণ হইল, গত রাত্রে তিনি ঘামাইয়া পড়িলে সে নিজের শালখানা পাট করিয়া তাঁহার পায়ের উপর চাপা দিয়া অঞ্চলমাত্র গায়ে দিয়া পড়িতে বসিয়াছিল। ঘামের মধ্যে মাঝে মাঝে তাহার অত্যন্ত শীত করিতেছিল মনে পড়ে, তাহার পরে জাগিয়া উঠিয়া ইহাই দেখিতেছে । কিন্তু স্ত্রীর একান্ত লক্ষিজাত মান মাখের পানে চাহিয়া মহিম সস্নেহে সকৌতুক হাসিল । কহিল, এতে লক্ষজা কি অচলা ? চাকরাটাই হয়ত উলট-পালটা করে তোমারটা তার ঘরে দিয়ে তারটা এখানে রেখে গিয়েছে। না হয় সরেশ নিজেই হয়ত কাল বিকেলবেলা ফেলে গিয়েছে, রাতে চিনতে না পেরে তুমি গায়ে দিয়েছ । বেয়ারাকে ডেকে বদলে আনতে বলে দাও । দিই বলিয়া সেখােনা হাতে করিয়া অচলা বাহির হইয়া আসিল এবং পাশের ঘরে ঢুকিয়া যখন অবসনের মত বসিয়া পড়িল, তখন বঝিতে কিছই আর তাহার অবশিষ্ট ছিল না। অনেক রাত্ৰে সকলে ঘামাইয়া পড়িলে সরেশ যে নিঃশব্দে ঘরে প্রবেশ করিয়াছিল এবং শীতের মধ্যে তাহাকে ওভাবে নিদ্রিত দেখিয়া আপনার গাত্রেবাসখানি দিয়া ঘামন্ত তাহাকে সস্নেহে সযত্নে আচ্ছাদিত করিয়া নীরবে চলিয়া গিয়াছিল, ইহাতে তাহার। আর লেশমাত্ৰ সংশয় রহিল না। সে চোখ বজিয়া সেই আনত সতৃষ্ণ দক্ষিট যেন সম্পলেট দেখিতে পাইয়া রোমাণিত হইয়া উঠিল । তাহার মনে হইতে লাগিল, শধ, তাহাকেই দেখিবার জন্য এবং ভাল করিয়াই দেখিবার জন্য সে অমন করিয়া আসিয়াছে এবং হয়ত প্রতি রাত্রেই আসিয়া থাকে, কেহ জানিতেও পারে না । এই কদাচারে তাহার লক্ষজার পরিসীমা রহিল না ; এবং ইহাকে সে কুৎসিত বলিয়া, গহিত বলিয়া, অভদ্র বলিয়া সহস্রপ্রকারে অপমানিত করিতে লাগিল এবং অতিথির প্রতি গহস্বামীর এ চৌযািবত্তিকে সে কোনদিন ক্ষমা করিবে না বলিয়া নিজের কাছে বারংবার প্রতিজ্ঞা করিল ; কিন্তু তথাপি তাহার সমস্ত মনটা ষে এই অভিযোগে কোনমতেই সায় দিতেছে না, ইহাও তাহার অগোচর রহিল না এবং কোথায় কিসে যে তাহাকে এতদিন উঠিতে বসিতে বিধিতেছিল, তাহাও যেন একেবারে সম্পন্ট হইয়া দেখা দিল । কেদারবাবর এক বাল্যবন্ধ জব্বলপার শহরে বাস করেন ; তাহার নিকট হইতে উত্তর আসিল, জলবায় ও প্রাকৃতিক দশ্যে এ স্থান অতি উৎকৃষ্ট । তাঁহায় নিজের বাসাও খাব বড় ; অতএব মহিমের যদি আসাই হয়, ত সে সবচ্ছেদে তাঁহার কাছেই থাকিতে পারে । একদিন সকালে কেদারবাব আসিয়া এই সংবাদ জ্ঞাপন করিলেন ; এবং মাঙ্ক