পাতা:গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গহীদাহ SN অথচ দঃখের সর্বশ্নের মধ্যে যেমন একটা অপরিস্ফুট মাক্তির চেতন্য সঞ্চারণ করে, তেমনি এই বোধটিও তা হার একেবার তিরোহিত হয় নাই যে, অদ্যুলেটর বিড়ম্বণায় আজ যাহা ফাঁকি, ইহাই একদিন সতি্যু হইয়া উঠিবার পথে কোন বাধাই ছিল না । এই সরেশই তাহার সবামী হইতে পারত, এবং কোন এক ভবিঘ্যতে ইহা একেবারেই অসম্পভব, এমন কথাও কেহ জোর করিয়া বলিতে পারে না । তাহাদের অন্যােরােপ সকল সমাজেই বিধবার আবার বিবাহ হয়, হিন্দী নারীর মত কেবল একটিমাত্র লোকের কাছেই পতীত্বের বন্ধন ইহকাল ও পরকাল ব্যাপিয়া বহন করিয়া ফিরিবার অলঙ্ঘ্য অনশাসন তাহদের মানিতে হয় না । তাই জীবনমরণে শািন্ধ কেবল একজনকেই অনন্যগতি বলিয়া ভাবনা করিবার মত অবরাদ্ধ মন তাহার কাছে প্রত্যাশা করা যায় না । সেই মন এক স্বামীর জীবিতকালেই অপরকে স্বামী ধালিতে অপরাধের ভারে যতই কেননা পীড়িত, লসজা ও অপমানের জ্বালায় যতই না জ্বলিতে থাকুক, ধম ও পরকালের গদা তাহাকে ধরাশায়ী করিয়া দিবার ভয় দেখাইতে পারিল না । বন্ধ দরজায় ঘা দিয়া রামবােব ডাকিয়া বলিলেন, জলসপশ না করে। শয়ে পড়লে মা, শরীরটা কি খাব খারাপ বোধ হচ্ছে ? অচলার চিন্তার সত্ৰ ছিড়িয়া গেল । হঠাৎ মনে হইল, এ যেন তাহার বাবার গলা । রাগ করিয়া অসময়ে শাইয়া পড়িলে ঠিক এমনি উদ্বিগ্ন-কণ্ঠে তিনি কৰাটের বাহিরে দাঁড়াইয়া ডাকাডাকি করিতেন । এই চিন্তাটাকে সে কিছুতেই ঠাঁই দিত না, কিন্তু এই স্নেহের আহবানকে সে ঠেকাইতে পারিল না, চক্ষের নিমিষে তাহার দই চক্ষ অশ্রাপণ হইয়া উঠিল । তাড়াতাড়ি মাছিয়া ফেলিয়া রুদ্ধকন্ঠ পরিৎকার করিয়া সাড়া দিল, এবং দ্বার উন্মািন্ত করিয়া সম্পমখে আসিয়া দাঁড়াইল । এই বদ্ধ ব্যক্তি এতদিনে অত ঘনিষ্পাঠ্যতা সত্তেৰও বরাবর একটা দীরত্ব রক্ষা করিয়াই চলিতেন ; এ বাটীতে ইহাদের আজ শেষ দিন মনে করিয়াই বোধ হয় এক নিমিষে এই ব্যবধান অতিক্ৰম করিয়া গেলেন । এক হাত অচলার কাঁধের উপর রাখিয়া, অন্য হাতে তাহার ললাট সংপশ করিয়া মহত পরেই সহস্যে বলিলেন, বড়ো জ্যাঠামশাইয়ের সঙ্গে দলটামি মা ? কিছৰ হয়নি, এসো, বলে হাত ধরিয়া অনিয়া ব্যারালদার একটা চেয়ারের উপর বসাইয়া দিলেন । অদরে আর একটা চৌকির উপর সমরেশ বসিয়াছিল ; সে মাখ তুলিয়া একবার চাহিয়াই আবার মাথা হে’ট করিল । কথা ছিল রাত্রে ধীরে-সস্থে বসিয়া সারাদিনের কাজকমের একটা আলোচনা করা হইবে, সে সেই জন্যই শািন্ধ একাকী বসিয়া রামবাবার ফিরিয়া আসার প্রতীক্ষা করিতেছিল । তাহার প্রতিই চাহিয়া বদ্ধ একটু হেসে কহিলেন, সরেশাবাব, আপনার ঘরের লক্ষনীটী৷ ত কোন এক বিলিতি বাপের মেয়ে-দিন-ক্ষণ, পাঁজি-পথি মানেন না। তখন আপনি নিজে মােনন, না মাননি, বিশেষ যায়-আসে না-কিন্তু আমার এই