পাতা:গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ রামবােব বাড়ি ছিলেন না। পরদিন বক্সার হইতে ফিরিয়া মহিমের চিঠি পড়িয়া বাহির হইতে মাহত বিলম্বব করিলেন না-সমস্ত পথ ঘোড়াটাকে নিমমি ছটাইয়া আধমরা করিয়া তুলিয়া যখন মােঝুলিতে পৌছিলেন তখন বেলা অবসান হইতেছে। পলিশের দারোগা ভাবিয়া দোকানী মন্বয়ং পথ দেখাইয়া নন্দ পাড়ের নিমতলায় আনিয়া উপস্থিত করিল এবং এক্কা হইতে অবতরণকালে সসম্পমানে ঘোড়ার লাগাম ধরিল । ইহারই কাছে খবর পাইয়া জানিলেন, অচলাও আসিয়াছে । সদর-দরজা খোলা ছিল, ভিতরে পা দিয়াই ব্যাপারটা ববিতে বাকী রহিল না । ঘণ্টা-দাই হইল সরেশের মাতৃত্যু হইয়াছে। খাটিয়ার উপর তাহার মতদেহ আপাদমস্তক চাপা দেওয়া এবং অনতিদারে পায়ের কাছে অচলা চুপ করিয়া বসিয়া । অকস্মাৎ এই দশ্য বদ্ধ সহিতে পারিলেন না-মা গো । বলিয়া উচ্ছসিত শোকে কদিয়া উঠিলেন । অচলা মাখ তুলিয়া একবার চাহিল মাত্র, তার পরে তেমনি অধোমখে নিঃশব্দে বসিয়া রহিল। এই আত কণ্ঠ যেন শােধ তাহার কানো গেল, কিন্তু ভিতরে t°"छ्ळ भाष् । মহিম বাটীর মধ্যে কাঠের সন্ধান করিতেছিল, কুন্দনের শব্দে বাহির হইয়া আসিল । কহিল, সরেশ এই কতক্ষণ মারা গেল। রামবােব । আপনি এসেছেন, ভালই হয়েছে, নইলে একলা বড় অসবিধে হতো । রামবােব নীরবে চোখ মছিতে লাগিলেন। তিনি কি করবেন, কি বলিনেন, কি করিয়া ওই মেয়েটার চোখের উপর ঐ ভীষণ নিদারণে কাষে সাহায্য করিতে অগ্রসর হইবেন, তাহার কুলকিনারা ভাবিয়া পাইলেন না । মহিম কহিল, নদী দরে নয়, রঘবীর কিছু কিছল কাঠ বয়ে নিয়ে গেছে, আরও কিছু কাঠ পাওয়া গেছে--সেইটে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা তিনজনেই ওকে নিয়ে যেতে পারবো । নইলে গ্রামে আর লোক নেই, থাকলেও বোধ হয়। কেউ বাঙালীর মড়া ਸ রামবােব তােহা জানিতেন । অচলার অগোচরে চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করিলেন, आभन्ना पर्दछन आद्र gक ? মহিম বলিল, রঘবীরও হয়ত সাহায্য করতে পারে । শনিয়া বদ্ধ ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন, কহিলেন, না না, সে কিছতেই হলে চলবে। না । ব্রাহ্মণের শিব আর কাকেও আমি ছাতে দিতে পারব না। নদী যখন দরে নয়। তখন আমাদের দ’জনকেই যেমন করে হোক নিয়ে যেতে হবে । বেশ তাই, বলিয়া মহিম পােনরায় ভিতরে গিয়া কাঠ-সংগ্রহে প্ৰবত্ত হইল ।