পাতা:গোচারণের মাঠ.pdf/৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভূমিকা।

 শ্রীযুক্ত বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, এই 'গোচারণের মাঠ’ পড়িয়া আমাকে যে পত্র লেখেন তাহা ভূমিকা স্বরূপ প্রকাশ করিলাম, ইহাতে আর কিছু না হয়, আমার আশার এবং আক্ষেপের কথা ব্যক্ত করিবে।

শ্রীঅক্ষয়চন্দ্র সরকার।

 আশীর্ব্বাদ বিজ্ঞাপনঞ্চ বিশেষঃ

 তোমার গোচারণের মাঠ পড়িয়াছি। ২৪ পৃষ্ঠা কাব্য খানির মধ্যে একটিও যুক্তাক্ষর নাই;—বাঙ্গালী ভাষা তোমার আজ্ঞাধীন, যদি ইহা প্রমাণ করিবার জন্য লিখিয়া থাক, তবে তোমার অভিপ্রায় সিদ্ধ হইয়াছে স্বীকার করিতে হইবে।

 তোমার উদ্দেশ্য যাহাই হউক, যুক্ত অক্ষর ছাড়িয়া দেওয়াতে একটা বড় সুফল ফলিয়াছে। অতি সরল বাঙ্গালী ভাষায় কাব্য খানি লিখিত হইয়াছে। বাঙ্গালা ভাষায় যে সকল শব্দে যুক্ত অক্ষর আছে, সে গুলি প্রায় সংস্কৃত মুলক। অতএব যুক্ত-অক্ষর পরিত্যাগ করিলে কাজে কাজেই কট মট, সংস্কৃতবহুল ভাষাও পরিত্যক্ত হয়; যে সরল বাঙ্গালায় লোকে কথা বার্ত্তা কয়, সেই ভাষা আসিয়া পড়ে। ভাষা সম্বন্ধে ইহা সামান্য লাভ নহে। যত দিন না প্রচলিত বাঙ্গালায় বহি লেখার পদ্ধতি চলিত হয়, তত দিন সাধারণ লোকে বহি পড়িবে না; সাধারণ লোকে বহি না পড়িলে, লেখার উদ্দেশ্য সফল হইবে না, আর ভাষারও প্রকৃত পুষ্টিলাভ হইবে না।