পাতা:গোড়ায় গলদ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোড়ায় গলদ >知, ক্ষান্তমণি। সে ভাই, আমি ভালো পারি নে। ইন্দুমতী। সেইজন্যেই তো এত করে মুখস্থ করাচ্ছি। আচ্ছা, তুমি তবে চন্দ্রবাৰু সাজো, আমি তোমার স্ত্রী সাজছি— த்ள ক্ষান্তমণি। না ভাই, সে আমি পারব না— ইন্দুমতী। তবে যা বলে দিয়েছি তাই করো। আচ্ছা, তবে আরম্ভ হোক। বড়োবউ, চাপকানটা খুলে আমার ধুতি-চাদরটা এনে দাও তো। ক্ষান্তমণি। (উঠিয়া) এই দিচ্ছি। ইন্দুমতী। ও কী করছ ! তুমি ঐখানে হাতের উপর মাথা রেখে বসে থাকো। বলো—নাথ, আজ সন্ধেবেলায় কী সুন্দর বাতাস দিচ্ছে । আজ আর কিছুতে মন লাগছে না, ইচ্ছে করছে পাখি হয়ে উড়ে যাই । 屿 ক্ষান্তমণি। (যথাশিক্ষামত) নাথ, আজ সন্ধেবেলায় কী সুন্দর বাতাস দিচ্ছে। আজ আর কিছুতে মন লাগছে না, ইচ্ছে করছে পাখি হয়ে উড়ে যাই। ইন্দুমতী। কোথায় উড়ে যাবে। তার আগে আমায় লুচি দিয়ে যাও, ভারি খিদে পেয়েছে— ক্ষান্তমণি। (তাড়াতাড়ি উঠিয়া) এই দিচ্ছি— ইন্দুমতী। এই দেখো, সব মাটি করলে। তুমি যেমন ছিলে তেমনি থাকো, বলো— লুচি। কই লুচি তো আজ ভাজি নি। মনে ছিল না। আচ্ছা, লুচি কাল হবে এখন। আজ এসো এখানে এই মধুর বাতাসে বসে— চন্দ্রকান্ত। (নেপথ্য হইতে) বড়োবউ। ইন্দুমতী। ঐ চন্দ্রবাবু আসছেন। আমাকে দেখতে পেয়েছেন বোধ হল। তুমি বোলো তো ভাই, বাগবাজারের চৌধুরীদের কাদম্বিনী। আমার পরিচয় দিয়ো না, লক্ষ্মীটি, মাথা খাও ! [পলায়ন পঞ্চম দৃশ্য পাশ্বের ঘর নিমাই আসীন চাপকান-শামলা-পরা ইন্দুমতীর ছুটিয়া প্রবেশ নিমাই। এ কী : ইন্দুমতী। ছি ছি, আর-একটু হলেই চন্দ্রবাবুর কাছে এই বেশে ধরা পড়তুম। তিনি কী মনে করতেন । আমাকে বোধ হয় দেখতে পান নি। (হঠাৎ নিমাইকে দেখিয়া) ও মা, এ-যে সেই ললিতবাবু! আর তো পালাবার পথ নেই ! (সামলাইয়া লইয়া ধীরে ধীরে চাপকান-শামলা খুলিয়া নিমাইয়ের প্রতি) তোমার বাবুর এই শামলা, আর এই চাপকন । সাবধান করে রেখো, হারিয়ো না । আর শিগগির দেখে এসো দেখি বাগবাজারের চৌধুরীবাবুদের বাড়ি থেকে পালকি এসেছে কি না । নিমাই। (ঈষৎ হাসিয়া) যে আজ্ঞা। [প্ৰস্থান ইন্দুমতী। ছি ছি! লজ্জায় ললিতবাবুকে ভালো করে দেখে নিতেও পারলুম না। আজ কী করলুম। ললিতবাবু কী মনে করলেন। যা হোক, আমাকে তো চেনেন না। ভাগ্যিস হঠাৎ বুদ্ধি জোগাল, বাগবাজারের চৌধুরীদের নাম করে দিলুম। চন্দ্রবাবুর এ বাসাটিও হয়েছে তেমনি। অন্দর বাহির সব এক। এখন আমি কোন দিক দিয়ে পালাই। ঐ আবার আসছে। মানুষটি তো ভালো নয়। অন্য কোনো লোক হলে অবস্থা বুঝে চলে যেত। ও আবার ছল করে যে ফিরে আসে। কেন বাপু, দেখবার জিনিস এখানে কী এমন আছে। "