ললিতা জিজ্ঞাসা করিল, “তিনি তাতে কী বললেন?”
সতীশ কহিল, “তিনি বললেন, মেয়েরা বাঘ দেখলে ভয় করবে। আমার কিন্তু কিছু ভয় হয় নি।”
বলিয়া সতীশ পৌরুষ-অভিমানে বুক ফুলাইয়া বসিল।
ললিতা কহিল, “তা বই-কি! তোমার বন্ধু বিনয়বাবুর সাহস যে কত বড়ো তা বেশ বুঝতে পারছি। না ভাই দিদি, আমাদের সঙ্গে করে ওঁকে সার্কাস দেখাতে নিয়ে যেতেই হবে।”
সতীশ কহিল, “কাল যে দিনের বেলায় সার্কাস হবে।”
ললিতা কহিল, “সেই তো ভালো। দিনের বেলাতেই যাব।”
পরদিন বিনয় আসিতেই ললিতা বলিয়া উঠিল, “এই-যে ঠিক সময়েই বিনয়বাবু এসেছেন। চলুন।”
বিনয়। কোথায় যেতে হবে?
ললিতা। সার্কাসে।
সার্কাসে! দিনের বেলায় এক-তাঁবু লোকের সামনে মেয়েদের লইয়া সার্কাসে যাওয়া! বিনয় তো হতবুদ্ধি হইয়া গেল।
ললিতা কহিল, “গৌরমোহনবাবু বুঝি রাগ করবেন?”
ললিতার এই প্রশ্নে বিনয় একটু চকিত হইয়া উঠিল।
ললিতা আবার কহিল, “সার্কাসে মেয়েদের নিয়ে যাওয়া সম্বন্ধে গৌরমোহনবাবুর একটা মত আছে?”
বিনয় কহিল, “নিশ্চয় আছে।”
ললিতা। সেটা কিরকম আপনি ব্যাখ্যা করে বলুন। আমি দিদিকে ডেকে নিয়ে আসি, তিনিও শুনবেন!
বিনয় খোঁচা খাইয়া হাসিল। ললিতা কহিল, “হাসছেন কেন বিনয়বাবু। আপনি কাল সতীশকে বলেছিলেন মেয়েরা বাঘকে ভয় করে— আপনি কাউকে ভয় করেন না নাকি?”
ইহার পরে সেদিন মেয়েদের লইয়া বিনয় সার্কাসে গিয়াছিল। শুধু তাই
১৫০