দেবেন। এমন সমাজের জন্যে আমি গৌরব বোধ করি নে।
ছাত্রীদের সম্পূর্ণ তিরোধান দেখিয়া, সুচরিতা ব্যাপারখানা কী এবং কাহার দ্বারা ঘটিতেছে তাহা বুঝিতে পারিয়াছিল। সে এ সম্বন্ধে কোনো কথাটি না কহিয়া উপরের ঘরে সতীশকে তাহার আসন্ন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করিতেছিল।
সুধীরের সঙ্গে কথা কহিয়া ললিতা সুচরিতার কাছে গেল, কহিল, “শুনেছ?”
সুচরিতা একটু হাসিয়া কহিল, “শুনি নি; কিন্তু সব বুঝেছি।”
ললিতা কহিল, “এ-সব কি সহ্য করতে হবে?”
সুচরিতা ললিতার হাত ধরিয়া কহিল, “সহ্য করাতে তো অপমান নেই। বাবা কেমন করে সব সহ্য করেন দেখেছিস তো?”
ললিতা কহিল, “কিন্তু সুচিদিদি, আমার অনেক সময় মনে হয় সহ্য করার দ্বারা অন্যায়কে যেন স্বীকার করে নেওয়া হয়। অন্যায়কে সহ্য না করাই হচ্ছে তার প্রতি উচিত ব্যবহার।”
সুচরিতা কহিল, “তুই কী করতে চাস ভাই বল্।”
ললিতা কহিল, “তা আমি কিচ্ছু ভাবি নি— আমি কী করতে পারি তাও জানি নে— কিন্তু একটা-কিছু করতেই হবে। আমাদের মতো মেয়েমানুষের সঙ্গে এমন নীচভাবে যারা লেগেছে তারা নিজেদের যত বড়ো লোক মনে করুক তারা কাপুরুষ। কিন্তু তাদের কাছে আমি কোনোমতেই হার মানব না— কেনোমতেই না। এতে তারা যা করতে পারে করুক।”
বলিয়া ললিতা মাটিতে পদাঘাত করিল।
সুচরিতা কোনো উত্তর না করিয়া ধীরে ধীরে ললিতার হাতের উপর হাত বুলাইতে লাগিল। কিছুক্ষণ পরে কহিল, “ললিতা, ভাই, একবার বাবার সঙ্গে কথা কয়ে দেখ্।”
ললিতা উঠিয়া দাঁড়াইয়া কহিল, “আমি এখনই তাঁর কাছেই যাচ্ছি।”
ললিতা তাহাদের বাড়ির দ্বারের কাছে আসিয়া দেখিল নতশিরে বিনয়