পাতা:গৌড়লেখমালা (প্রথম স্তবক).djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লেখমালা।

स्वैरं भ्रान्त्वा तदनु मलयोपत्यका-चन्दनेषु।
कृत्वा सान्द्रै स्तरुषु जड़तां शीकरै र-
२० [भ्र-तुल्याः]
[प्राले]याद्रेः कटक मभजन् यस्य सेना-गजेन्द्राः॥(১৪)


বঙ্গানুবাদ।

(১২)

 [দোষার] রজনীর[১] সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া, পর্ব্বত-শিখরে পদবিন্যাস করিয়া, সকল দিকে কিরণ বিতরণ করিয়া, সূর্য্যদেব যেমন উদয়াচল হইতে উদিত হইয়া থাকেন; সেইরূপ দোষের সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া, সমস্ত সামন্ত-নরপালগণের মস্তকে পদবিন্যাস করিয়া, সকল দিকেই প্রতাপ বিস্তৃত করিয়া, অজ্ঞানান্ধকার-বিনাশী স্নিগ্ধপ্রকৃতি লোকানুরাগভাজন নয়পাল নামক নরপতি সেই [পূর্ব্ব শ্লোকোক্ত] নরপালের পুণ্যবলে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন।

(১৩)

 তাঁহা হইতে তেজস্বী বিগ্রহপালদেব [নামক] নৃপতি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। দেখিবার আগ্রহে, সজ্জনগণ তাঁহাকে যেন লোচনপুটে পান করিতেন[২]। নিয়ত স্মররিপু-পূজানুরক্ত,[৩] শত্রুকুল-কালরুদ্র, বিষ্ণু অপেক্ষাও অধিক সংগ্রাম-চতুর, বর্ণাশ্রমের আশ্রয়স্থল, এই রাজা স্বকীয় শুভ্র যশঃপ্রভায় জগৎকে সুরঞ্জিত করিয়াছিলেন।

  1. এই শ্লোকে সূর্য্যদেবের সহিত তুলনা করিবার জন্য, কবি “প্রত্যক্ষর-শ্লেষের” অবতারণা করিয়া গিয়াছেন। সূর্য্য-পক্ষে “দোষা-সঙ্গ” রজনীর সঙ্গকে; রাজপক্ষে “দোষ-আসঙ্গ” দোষাসক্তিকে; সূর্য্য-পক্ষে “ক্ষিতিভৃৎ” পর্ব্বতকে; রাজপক্ষে সামন্ত-রাজগণকে; সূর্য্য-পক্ষে “প্রসভ” অন্ধকার-বিনাশী কিরণ-বিকাশকে; রাজপক্ষে বাহুবলকে সূচিত করিতেছে। “গৌড়ের ইতিহাসে” [১২৮ পৃষ্ঠায়] “দোষাসঙ্গ” পাঠ “যোষাসঙ্গ” বলিয়া উদ্ধৃত হইয়াছে। রজনীর নাম “দোষা” সংস্কৃত সাহিত্যে সুপরিচিত। এক সময়ে দোষা-শব্দের ব্যবহার প্রচলিত ছিল। আর্য্যাসপ্তশতীর [২৯৮] “दोषा अपि भूषायै गणिकायाः शशिकलायाश्च” এবং মাঘের [৪।৪৬] “दोषापि नून महिमांशुरसौ किलेति व्याकोश-कोकनदतां दधते नलिन्यः” উল্লেখযোগ্য। চন্দ্রের নাম “दोषाकर”, প্রদীপের নাম “दोषा-तिलक”।
  2. এইরূপ রচনা-কৌশল, কালিদাসের রচনা-কৌশলের অনুকরণ বলিয়া কথিত হইতে পারে।
  3. মহাদেব এবং বুদ্ধদেব উভয়েই “স্মররিপু” বলিয়া কথিত। এই তাম্রশাসন [৩৬ পংক্তি] “भगवन्तं बुद्ध-भट्टारकमुद्दिश्य” প্রদত্ত হইয়াছিল; সুতরাং এখানে “স্মররিপু-পূজানুরক্ত”-বিশেষণটিকে রাজার বৌদ্ধমত-বিজ্ঞাপক বলিয়াই স্বীকার করিতে হইবে। “चातुर्व्वर्ण्य-समाश्रयः” এই বিশেষণপদ বিগ্রহপালদেবের বৌদ্ধমতানুরাগের বিরোধী বলিয়া গৃহীত হইতে পারে না। ধর্ম্মপালদেবও বর্ণাশ্রমধর্ম্মের আশ্রয় বলিয়া, দেবপালদেবের তাম্রশাসনে, উল্লিখিত।

১২৬