পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের দিবা-রাত্রি
৮৯

ঊনত্রিশ দিন সময় লয়, ইহা আমরা আগেই দেখিয়াছি। সুতরাং বলিতে হয়, পৃথিবীর দিবারাত্রির পরিমাণ যেমন চব্বিশ ঘণ্টা, চাঁদের দিবারাত্রি সেই রকম সাড়ে ঊনত্রিশ দিনে।

 কাজেই মোটামুটি হিসাবে চাঁদের উপরকার প্রত্যেক জায়গায় পনেরো দিন রাত্রি এবং পনেরো দিন লম্বা দিন হয়। আমাদের পৃথিবীতে গ্রীষ্মকালে যখন দিনগুলো একটু বড় হয় এবং শীতকালে রাত্রি লম্বা হয়, তখন বড় দিন ও বড় রাত্রির একটিকেও ভাল লাগে না। চাঁদে যদি মানুষ থাকিত তাহার নিকটে পনেরো দিন লম্বা রাত্রি এবং পনেরো দিন লম্বা দিন, কত অসহ্য হইত তাহা ভাবিয়া দেখ।

 তোমরা ভাবিতেছ, চাঁদে যদি পনেরো দিন ধরিয়া সূর্য্যের আলো ও তাপ লাগে, তাহা হইলে চাঁদের মাট পাথর তাতিয়া আগুন হইয়া পড়িবে। কিন্তু জ্যোতিষীরা ইহার ঠিক উল্‌টা কথা বলেন। তাঁদের মতে আমাদের পনেরো দিনের মত লম্বা দিনগুলা চাঁদকে একেবারে গরমই করিতে পারে না। বারো ঘণ্টা মাত্র সূর্য্যের তাপ পাইলে যে, পৃথিবী এত গরম হয়, তাহার একমাত্র কারণ পৃথিবীর চারিদিকের বাতাস এবং জলের বাষ্প। সূর্য্যের আলোর সঙ্গে পৃথিবীর উপরে যে তাপ আসে, আমাদের আকাশের বাতাস ও জলীয় বাষ্প তাহাকে পৃথিবী ছাড়িয়া পলাইতে দেয় না। কোনো জিনিসকে গরম রাখিতে হইলে যেমন আমরা তাহার চারিদিকে কম্বল মুড়িয়া দিই বা লেপ-কাঁথা জড়াই, পৃথিবীর আকাশের বাতাস ঠিক যেন লেপ বা কম্বলেরই কাজ করে। বাহির হইতে পৃথিবীতে যে তাপ আসে, আমাদের বায়ুর আবরণ তাহাকে পৃথিবী হইতে যাইতে দেয় না;—এজন্যই পৃথিবী বেশ গরম থাকিয়া মানুষের বাসের যোগ্য হইয়াছে।

 কিন্তু চাঁদে ত একটুও বাতাস নাই এবং জলের বাষ্পও নাই। কাজেই সূর্য্যের আলোর সঙ্গে যে তাপ চাঁদের উপরে আসিয়া পড়ে,