পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুধ
১০৩

 পৃথিবীর দিনরাত্রির পরিমাণ প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা, ইহা তোমরা জান। সে চব্বিশ ঘণ্টায় নিজের মেরুদণ্ডের চারিদিকে এক বার ঘুরপাক খায় বলিয়াই দিনরাত্রির পরিমাণ এই রকম হইয়াছে। প্রাচীন জ্যোতিষীদের জানা ছিল, বুধগ্রহও চব্বিশ ঘণ্টায় একবার ঘুরপাক যায়। কাজেই তাঁহারা বলিতেন, পৃথিবীতে যেমন চব্বিশ ঘণ্টায় দিন রাত্রি হয়, বুধেও তাহাই হয়। এখনকার জ্যোতিষীরা একথা স্বীকার করেন না। তাঁহারা খুব বড় দূরবীণ দিয়া বুধকে দেখিয়া বলিতেছেন, চাঁদ যেমন তাহার একটা পিঠই চিরকাল পৃথিবীর দিকে ফিরাইয়া রাখে, সেই রকমে বুধও তাহার দেহের একটা দিক্ সূর্য্যের দিকে ফিরাইয়া ঘুরিতেছে।

 তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, বুধের একটা পিঠেই চিরকাল রৌদ্র পায় এবং বাকি অংশটা চিরকালের জন্য অন্ধকারে ডুবিয়া থাকে। কাজেই বলিতে হইতেছে, বুধে পৃথিবীর মত দিনরাত্রির পরিবর্ত্তন হয় না। উহার একটা দিকে চিরকালের জন্য রাত্রি এবং আর একটা দিকে চিরকালের জন্য দিন হইয়া আছে। বুধগ্রহে সকাল সন্ধ্যা নাই, সূর্য্যের উদয় অস্ত নাই, গ্রীষ্ম বর্ষা প্রভৃতি ঋতুর পরিবর্ত্তনও নাই। কি ভয়ানক স্থান!

 বুধ পৃথিবীর চেয়ে সূর্য্যের অনেক কাছে আছে, এজন্য সূর্য্যের তাপ ও আলো তাহাতে অত্যন্ত বেশি পড়ে। আমরা রাঁধা-বাড়া করিবার জন্য কাঠ কয়লা কত কি জ্বালিয়া আগুন করি। কিন্তু বুধে সূর্য্যের তাপই এত বেশি যে, তাহাতেই জল টগ্‌বগ্ করিয়া ফুটিতে পারে,—আগুন জ্বালার দরকারই হয় না। সেখানে সূর্য্যকে আকারেও খুব বড় দেখায়,—বুধগ্রহের সূর্য্য আমাদের সূর্য্যের প্রায় নয় গুণ বড়।

 যেখানে এত গরম এবং যেখানে দিন-রাত্রি, তিথি-মাস, ঋতু-সম্বৎসর