পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১৪
গ্রহ-নক্ষত্র

 দক্ষ-যজ্ঞে সতীর প্রাণত্যাগের গল্প তোমরা শুন নাই কি? সতী অর্থাৎ দুর্গার পিতা দক্ষরাজা খুব জাঁকজমকের সঙ্গে এক ভোজের আয়োজন করিলেন এবং তাঁর সব মেয়ে-জামাইকে নিমন্ত্রণ করিলেন কিন্তু সব চেয়ে ছোট মেয়ে সতী ও তাঁহার স্বামী শিবকে নিমন্ত্রণ করিলেন না। শিব শ্মশানে বেড়াইতেন, বড় বড় সাপ গলায় বাঁধিয়া রাখিতেন, গায়ে ছাইভস্ম মাখিতেন এবং ষাঁড়ের উপর চাপিয়া ভিক্ষা করিতেন। এইসব দেখিয়া দক্ষরাজা শিবের উপরে রাগ করিয়াছিলেন; তাই শিবকে অপমান করিবার জন্যই তাঁহাকে নিমন্ত্রণ করেন নাই।

 পিতা মহাযজ্ঞ করিতেছেন শুনিয়া সতী স্থির থাকিতে পারিলেন না, তিনি শিবকে না বলিয়া বিনা-নিমন্ত্রণে বাপের বাড়ী গিয়া হাজির হইলেন। কিন্তু বাপ তাঁহাকে আদর করিলেন না; উপরন্তু শিবের অনেক নিন্দা করিতে লাগিলেন। বাপের বাড়ীতে গিয়া এই রকম অনাদর হইবে তাহা সতী আগে বুঝিতে পারেন নাই, বুঝিলে তিনি নিশ্চয়ই শিবের কাছ-ছাড়া হইয়া আসিতেন না। যাহা হউক, স্বামীর নিন্দা শুনিয়া সতী মনে খুব কষ্ট পাইয়া মূর্চ্ছিত হইয়া পড়িলেন। মূর্চ্ছা ভাঙাইবার জন্য খুব চেষ্টা করা হইল কিন্তু সে মূর্চ্ছা আার ভাঙিল না,—সতীর মৃত্যু হইল।

 শিব সতীর মৃত্যু-সংবাদ পাইবামাত্র তাঁহার অনুচর ভূত-প্রেত পিশাচদের সঙ্গে করিয়া দক্ষরাজার যজ্ঞ-স্থানে আসিয়া হাজির হইলেন। ভূতগুলা ভোজের সব আয়োজন নষ্ট করিয়া ফেলিল। স্ত্রীর মৃত্যুতে শিব শোকে এবং ক্রোধে পাগলের মত হইলেন। পুরাণে লেখা আছে, এই সময়ে তাঁহার কপাল হইতে এক বিন্দু ঘাম মাটিতে পড়িয়া এক ভয়ানক বীরপুরুষের উৎপত্তি করিয়াছিল। ভূত-প্রেতেরা দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করিবার জন্য অনেক পরিশ্রম করিতেছিল, কিন্তু ঐ বীরপুরুষটি জন্মগ্রহণ করিয়া এক নিমেষে একাই যজ্ঞক্ষেত্রকে শ্মশানক্ষেত্র করিয়া