পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৫৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মঙ্গল
১১৭

না চাপাইলে দুইয়ের ভার সমান হইবে না। যে মাল-মসলা দিয়া ভগবান মঙ্গলকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তাহা পৃথিবীর মাটিপাথরের চেয়ে অনেক হাল্‌কা।

 মঙ্গলের একটা ভাল লক্ষণ এই যে, বুধ ও শুক্রের মত ইহার এক পিঠে চিরদিনের জন্য রাত্রি এবং আর এক পিঠে চিরদিনের জন্য দিন নাই। দিন-রাত্রি ঋতু-সম্বৎসর সকলি মঙ্গলে আছে। এই হিসাবে ইহাকে পৃথিবীরই মত গ্রহ বলা যাইতে পারে। এই জন্যই আাজকালকার জ্যোতিষীরা বলিতেছেন, সম্ভবতঃ মঙ্গলে জীবজন্তু গাছপালা এবং মানুষের মত বুদ্ধিমান প্রাণী আছে।

 পৃথিবীতে দিন-রাত্রি কি রকমে হয়, তোমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। পৃথিবী প্রায় চব্বিশ ঘণ্টায় তাহার মেরুদণ্ডের চারিদিকে একবার লাট্টুর মত ঘুরপাক খায়, তাই আমাদের দিবারাত্রির পরিমাণ চব্বিশ ঘণ্টা। কিন্তু মঙ্গল তাহার মেরুদণ্ডের চারিদিকে ঘুরিতে প্রায় সাড়ে চব্বিশ ঘণ্টা সময় লয়। তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, মঙ্গলে দিবারাত্রির পরিমাণ আমাদের দিবারাত্রির প্রায় সমান; কেবল কয়েক মিনিট মাত্র বেশি। কিন্তু মঙ্গলের এক বৎসরের সহিত আমাদের এক বৎসরের তফাৎ বড় বেশি। পৃথিবী তিন শত পঁইষট্টি দিনে একবার সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসে, তাই আমাদের এক একটা বৎসর তিন শত পঁইষট্টি দিনে শেষ হয়। মঙ্গল ঐ রকমে সূর্য্যকে ঘুরিতে কেবলমাত্র ছয় শত সাতাশী দিন লয়। তাহা হইলে বুঝা যাইতেছে, মঙ্গলের এক বৎসর আমাদের প্রায় এক বৎসর এগারো মাসের সমান।

 সূর্য্যকে ঘুরিয়া আসিতে মঙ্গল কেন এত বেশি সময় লয়, তোমরা অনুমান করিতে পার কি? একটু ভাবিয়া দেখিলেই বুঝিবে, সূর্য্য হইতে পৃথিবীর দূরত্ব যত, মঙ্গলের দুরত্ব তার চেয়ে অনেক বেশি। এই জন্য মঙ্গলের পথটা পৃথিবীর পথের চেয়ে অনেক বড় হইয়া