পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৬০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২০
গ্রহ-নক্ষত্র

এই সময় ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে ইহাতে জলের চিহ্ন দেখা যায় না। শুষ্ক মরুভূমিতে সূর্য্যের আলো পড়িলে যেমন দেখায়, তখন মঙ্গলকে সেই রকম মরুভূমির মত দেখা যায়। মঙ্গলের গায়ের লাল রঙটা, বালির উপরকার রৌদ্রেরই রঙ্।

 পৃথিবীতে যে-সকল নদ নদী হ্রদ ও সমুদ্র আছে, তাহার কোনোটিকে কেহ কোদাল দিয়া খুঁড়িয়া প্রস্তুত করে নাই। এগুলি আপনা হইতে জন্মে এবং আপনা হইতে বুজিয়া আসে। কিন্তু খাল বিল পুষ্করিণী আমরা মজুর দিয়া বা এন্‌জিন্ দিয়া খুঁড়িয়া প্রস্তুত করি। মঙ্গলের উপরে যে সোজা সোজা থাল দেখা যায়, সেগুলি আপনা হইতে জন্মিয়াছে, কি মঙ্গলের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী তাহাদিগকে খুঁড়িয়াছে, এই কথাটির মীমাংসার জন্য অনেক দিন ধরিয়া জ্যোতিষীদের মধ্যে খুব তর্ক-বিতর্ক হইতেছে। এক দল জ্যোতিষী বলিতেছেন, এগুলি মঙ্গলের লোকেদের হাতে প্রস্তুত। হাতে-গড়া জিনিস না হইলে খালগুলি, এমন সোজা এবং এমন পরিষ্কার হইত না। যাহা আপন হইতে প্রস্তুত হয়, তাহা কখনই এমন সিম্‌সাম্ হয় না। পৃথিবীর প্রত্যেক নদীই আপনা হইতে প্রস্তুত হইয়াছে; এজন্য কোনো নদীকে কখনো ঠিক্ সোজা পথে চলিয়া সমুদ্রে মিলিতে দেখা যায় না। কাজেই স্বীকার করিতে হয়, মঙ্গলের খালগুলি স্বাভাবিক নদী-নালা নয়,—তাহা মঙ্গলেরই অধিবাসী কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীদের হাতে প্রস্তুত।

 আর এক দল জ্যোতিষী এই-সকল কথায় বিশ্বাস করেন না। তাঁহারা বলেন, মঙ্গলের উপরে যে সোজা রেখা দেখা যায়, সেগুলি সত্যই সোজা নয়। দূর হইতে মঙ্গলকে দেখি বলিয়া আমাদের চোখে ধাঁধা লাগে এবং এই ধাঁধায় পড়িয়া আমরা বাঁকা জিনিসকে সোজা দেথি এবং এলোমেলো জিনিসকে বেশ সিমসাম্ সাজানো দেখি।