পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৬৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মঙ্গলের চাঁদ
১২৫

আমাদের পৃথিবীর এই রকম দুটি চাঁদ থাকিত, তাহা হইলে আমরা হয় ত ছুটির দিনে সেখানে গিয়া বনভোজন করিতাম এবং সন্ধ্যার সময় বাড়ি ফিরিয়া আসিয়া চাঁদের দেশের গল্প করিতাম।

 মঙ্গলের চাঁদ দুইটির চলাফেরার রকম আরো মজার। আমাদের চাঁদ পৃথিবী ঘুরিয়া আসিতে কি-রকম চলাফেরা করে, তাহা তোমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। প্রায় ঊনত্রিশ দিনে তাহাকে আমরা ঘুরিয়া আসিতে দেখি। এই সময়ের মধ্যে অমাবস্যা হয়, পূর্ণিমা হয়, ক্ষয়বৃদ্ধি কত কি হয়। কিন্তু মঙ্গলকে ঘুরিয়া আসিতে “ফোবো” সাত ঘণ্টা চল্লিশ মিনিটের বেশি সময় লয় না। এই সময়ের মধ্যেই তাহার অমাবস্যা, পূর্ণিমা, ক্ষয়বৃদ্ধি সবই হইয়া যায়! কিন্তু মঙ্গলের দিনরাত্রির পরিমাণ চব্বিশ ঘণ্টার একটু বেশি; কাজেই মঙ্গলের একদিনে ফোবো তাহাকে তিনটা পাক দিয়া আসে, এবং এক একটা পাকে পূর্ণিমা অমাবস্যা সবই এক এক বার হয়। সুতরাং মঙ্গলের প্রত্যেক রাত্রিতে ফোবোর দুইটা করিয়া পূর্ণিমা হয়। ছয় ঘণ্টা অন্তর এক-একটা পূর্ণিমা,—বড় মজার ব্যাপার নয় কি?

 কেবল ইহাই নয়;—ফোবোর গতিবিধিও বড় অদ্ভুত। যে-সময়ে মঙ্গল নিজের মেরুদণ্ডের চারিদিকে ঘুরিয়া দিন-রাত্রি দেখাইতে থাকে, সে-সময়ে ফোবো মঙ্গলকে তিনবার ঘুরিয়া আসে। মঙ্গল পশ্চিম হইতে পূর্ব্বদিকে ঘুরপাক্ খায়, ফোবোও ঠিক সেই দিক্ ধরিয়াই মঙ্গলকে ঘুরিয়া আসে। তাহা হইলে তোমরা যদি মঙ্গলগ্রহে গিয়া দাঁড়াও, তবে ফোবোকে পশ্চিমে উদিত হইয়া হু হু করিয়া পূর্ব্বমুখে দৌড়িতে দেখিবে। সেখানে দেখিবার মত আর কিছুও যদি না থাকে, তবুও এই চাঁদটির ঘোড়দৌড় দেখিবার জন্য মঙ্গললোকে বাস করিতে ইচ্ছা করে। এমন মজার চাঁদ বোধ হয় বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডেও আর নাই। সে আমাদের চাঁদের মত পশ্চিম আকাশে উদিত হইয়া যখন উপরে উঠিতে আরম্ভ করে,