পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৭৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৃহস্পতি
১৩৩

ঊনিশ মাইল করিয়া দৌড়ায়, কিন্তু বৃহস্পতি দৌড়ায় কেবল আট মাইল করিয়া। এই জন্যই সূর্য্য-প্রদক্ষিণ করিতে তাহার এত দেরি হয়। কিন্তু আর এক দিকে বৃহস্পতির কাছে পৃথিবী হার মানিয়াছে। বৃহস্পতি তাহার মেরুদণ্ডের চারিদিকে খুব শীঘ্র শীঘ্র ঘুরিতে পারে। পৃথিবী এই রকমে ঘুরিতে প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা সময় লয়, কিন্তু বৃহস্পতি দশ ঘণ্টার মধ্যে সেই কাজটি সারে। এই জন্য বৃহস্পতির দিনরাত্রির পরিমাণ বড় অল্প। মোটামুটি হিসাবে পাঁচ ঘণ্টা দিন, আর পাঁচ ঘণ্টা রাত্রি। কিন্তু উহার এক এক বৎসর আমাদের বারো বৎসরের সমান।

 আমরা এ-পর্য্যন্ত দেখিয়া আসিয়াছি গ্রহদের নিজের আলো নাই। সূর্য্যের আলো গায়ে পড়িলে তাহাদিগকে উজ্জ্বল দেখায়। কিন্তু বৃহস্পতি-সম্বন্ধে জ্যোতিষীরা একটা নূতন কথা বলেন। তাঁহারা বলেন, ইহার নিজেরি হয় ত একটু-আধ্‌টু আলো আছে। বৃহস্পতির উপরকার রৌদ্রের আলো পৃথিবীর রৌদ্রের আলোর পঁচিশ ভাগের এক ভাগ মাত্র। কিন্তু তথাপি ইহাকে খুবই উজ্জ্বল দেখায়। যদি নিজের আলো না থাকিত, তাহা হইলে কেবল সূর্য্যের আলোতে উহাকে এত উজ্জ্বল দেখাইত না।

 আকারে যতই বড় হউক না কেন, বৃহস্পতির ওজন কিন্তু বেশি নয়। আমরা আগে বলিয়াছি, তাহার আয়তন তেরো শত পৃথিবীর সমান। কিন্তু ওজনের হিসাব করিতে গেলে দেখা যায়, এত বড় জিনিসটা কেবলমাত্র তিন শত পৃথিবীর ওজনের সমান। তাহা হইলে নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিতেছ, বৃহস্পতির দেহ পৃথিবীর মাটি-পাথরের মত ভারি জিনিস দিয়া প্রস্তুত নয়,—ইহাতে খুব হাল্‌কা জিনিসই আছে।

 তোমরা দূরবীণ দিয়া কখনো বৃহস্পতিকে দেখিয়াছ কি না জানি না। যদি না দেখিয়া থাক, একবার দেখিয়া লইয়ো। খালি চোখে দেখিলে ইহাকে একটা বড় নক্ষত্রের মত দেখায়। নক্ষত্রেরা যেমন একবার