ভাবিতেছ, ইঁহাদের দুজনের মধ্যে বুঝি খুব বন্ধুতা ছিল। কিন্তু তাহা নয়। দুজনের মধ্যে কোনো কালে দেখাশুনা ছিল না এবং কেহ কাহারো নামটি পর্য্যন্ত জানিতেন না। তখন পৃথিবীর সব জ্যোতিষীই ইউরেনসের কথা ভাবিতেছিলেন, তাই ইঁহারা দুজনে সেই কথা ভাবিতে ভাবিতে অঙ্ক কষিতে লাগিয়া গেলেন। ইঁহারা স্পষ্ট বুঝিলেন, যেমন চুম্বক লোহাকে টানিয়া রাখে, কোনো একটি বড় গ্রহ সেই রকমে ইউরেনস্কে টানিয়া রাখিতেছে, তাই সে ঠিক্ সময়ে আমাদিগকে দেখা দিতে পারিতেছে না। সেই গ্রহ কোথায়, ইহাই ঠিক্ করা এই দুই যুবকের কাজ হইল।
ভাবিয়া দেখ, এই রকম হিসাব কত শক্ত। কিন্তু আডামস্ বা লিভেরিয়ার কেহই পিছাইলেন না, খুব পরিশ্রম করিয়া হিসাব করিতে লাগিলেন।
দুজনের হিসাবই প্রায় এক সময় শেষ হইল এবং তাহা এমন পাকাপাকি করিয়া ঠিক্ করা হইল যে, শুনিলে অবাক্ হইতে হয়। যে অজানা গ্রহটি ইউরেনস্কে টানিতেছে, তাহা কত বড় এবং তাহা আকাশের কোন্ জায়গায় আছে, সব কথাই তাঁহারা কাগজ-পত্রে লিখিয়া রাখিলেন। তোমরা বোধ হয় ভাবিতেছ, দুজনে পরামর্শ করিয়া অঙ্ক কষিয়া একই রকমের ফল পাইয়াছিলেন। কিন্তু তাহা নয়, তখনো পর্য্যন্ত তাঁহাদের দুজনার আলাপ-পরিচয় হয় নাই।
আডামস্ সাহেবের হিসাবটা প্রথমে শেষ হইয়াছিল। শেষ হইবামাত্র তিনি সব কাগজ-পত্র ইংলণ্ডের রাজ-জ্যোতিষীর কাছে পাঠাইয়া দিলেন। কিন্তু রাজ-জ্যোতিষীর কাজ অনেক, তাই তিনি যুবক আডাম্সের হিসাব-পত্র হাতে পাইয়া তৎক্ষণাৎ তাহা পরীক্ষা করিতে পারিলেন না। এদিকে হিসাব শেষ হইবামাত্র লিভেরিয়ার সাহেব তাঁহার কাগজ-পত্র জর্ম্মানির একজন বড় জ্যোতিষী গল্ সাহেবের কাছে