পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২২১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ধূমকেতু
১৭৩

পথে বা প্রবেশের পথে বৃহস্পতি শনি ইউরেনস্ ও নেপ্‌চুনের মত বড় বড় গ্রহদের সঙ্গে যদি ধূমকেতুর দেখা হয়, তাহা হইলেই সর্ব্বনাশ! ইহারা ধূমকেতু বেচারাদের লইয়া ভয়ানক টানা-হেঁচ্‌ড়া করে এবং তাহাদের বেগ কমাইয়া দেয়। ইহাতে দুই একটা ধূমকেতু এমন জখম হইয়া পড়ে যে, তাহারা আর সূর্য্যের রাজ্য ছাড়িয়া পলাইতে পারে না। কাজেই তখন তাহাদিগকে গ্রহদেরি মত সূর্য্যের চারিদিকে ঘুরিয়া মরিতে হয়। এই রকম টানাটানি ধস্তাধস্তিতে দুই-একটা ধূমকেতু ভাঙিয়া চুরিয়া গুঁড়া হইয়া গিয়াছে, এমন ঘটনাও জ্যোতিষীরা স্বচক্ষে দেখিয়াছেন। এ-সম্বন্ধে দু-একটা গল্প তোমাদিগকে পরে বলিব।

 তাহা হইলে দেখা যাইতেছে,—ধূমকেতুদের মধ্যে পলাতক ও বন্দী এই দুই রকম ভাগ আছে। পলাতকদের সংখ্যাই বেশি। ইহারা সূর্য্যের রাজ্যে প্রবেশ করিয়া একবার মাত্র সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং তার পরে চিরকালের জন্য এই রাজ্য ছাড়িয়া চলিয়া যায়। যদি আকারে বড় হয়, তবেই আমরা পৃথিবী হইতে ইহাদিগকে একবার মাত্র দেখিতে পাই। তাহার পরে ইহারা যে কোথায় যায়, তাহা ঠিক্ করিতে পারি না।

 বন্দী ধূমকেতুরা সূর্য্যজগতে প্রবেশ করিয়া, সূর্য্য বা বৃহস্পতি প্রভৃতির টানে এমন বাঁধা পড়িয়া যায় যে, তাহাদের আর পলাইবার শক্তি থাকে না। কাজেই তাহারা গ্রহদের মত এক-একটা নির্দ্দিষ্ট পথে ও নির্দ্দিষ্ট সময়ে সূর্য্যকে পাক দিতে থাকে। নির্দ্দিষ্ট সময়ের শেষে সূর্য্য প্রদক্ষিণ করিবার জন্য তাহারা যখনি পৃথিবীর কাছ দিয়া যাইতে আরম্ভ করে, তখনি আমরা তাহাদিগকে দেখিতে পাই। ইহারা বার বার আমাদিগকে দেখা দিয়া বার বার লুকায়। কি প্রকার পথ ধরিয়া কত দিনে ইহাদের সূর্য্য-প্রদক্ষিণ হয়, জ্যোতিষীরা তাহার সকলি জানেন। কাজেই কোন্ বৎসরের কোন্ তারিখে পৃথিবী হইতে তাহাদিগকে দেখা