পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৩১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ধূমকেতুর আকৃতি-প্রকৃতি
১৮৩

হইয়া যায়। ১৮৩২ সালে যে দিন বায়েলার ধূমকেতুর আসার কথা ছিল, তাহার দশ দিন আগে হইতে জ্যোতিষীরা উহার খোঁজ আরম্ভ করিয়াছিলেন। ঠিক্ সময়ে ধূমকেতু দেখা দিল; কিন্তু ১৮২৬ সালে তাহাকে যে রকমটি দেখা গিয়াছিল, এবারে সে রকম দেখা গেল না। বুঝা গেল, ধূমকেতুটি যেন এক গোলাকার পিণ্ডের মত হইয়া আসিয়াছে। জ্যোতিষীরা ভাবিলেন, বৃহস্পতি বুঝি তাহার লেজটি ছিঁড়িয়া দিয়াছে।

 ইহার পর ১৮৩৯ সালে বায়েলার আসিবার কথা ছিল। সে ঠিক সময়েই আসিয়াছিল, কিন্তু সে বার জ্যোতিষীরা তাহাকে ভাল করিয়া দেখিবার সুবিধা পান নাই। কাজেই ১৮৪৬ সালে সে যখন আবার ফিরিয়া আসিবে, তখন তাহার আকৃতি কি রকম হয় দেখিবার জন্য জ্যোতিষীরা প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।

 সময় আসিল, জ্যোতিষীরা দূরবীণ দিয়া বায়েলাকে দেখিতে আরম্ভ করিলেন। কিন্তু এবারে তাহার যে মূর্ত্তি দেখা গেল, তাহাতে সকলেই অবাক্ হইয়া গেলেন। বায়েলার সেই লম্বা লেজ খুঁজিয়া পাওয়া গেল না এবং তাহার সেই সুগোল মূর্ত্তি মিলিল না,—সে একটা মুগুরের মত একটা অদ্ভুত আকৃতি লইয়া আকাশে দেখা দিল। তার পরে সে যতই সূর্য্যের কাছাকাছি হইতে লাগিল, তাহার মাঝখানটা সরু হইয়া ঠিক ডম্‌বেলের মত হইয়া পড়িল এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটা ধূমকেতু সুস্পষ্ট দু’টা ধুমকেতু হইয়া দাঁড়াইল।

 এই ঘটনায় জ্যোতিষীরা যে কত বিস্মিত হইয়াছিলেন, তাহা বোধ হয় তোমরা বুঝিতে পারিতেছ। কিন্তু সেই যমজ ধূমকেতুকে সে বৎসর আর ভাল করিয়া দেখিবার সুবিধা হইল না। জ্যোতিষীরা হিসাব করিয়া দেখিলেন, ১৮৫২ সালে তাহারা আবার দেখা দিবে। কাজেই এই ছয়টা বৎসর তাঁহারা ধৈর্য্য ধরিয়া প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।