পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গ্রহ-নক্ষত্র

আমরা বুঝিতে পারি, যে আমরা চলিয়াছি। পৃথিবী চলিবার সময়ে সে-প্রকার কাঁপুনি দেয় না, হেলে না, দোলে না এবং শব্দও করে না; কাজেই আমরা পৃথিবীতে চাপিয়া চলিয়াও বুঝিতে পারি না যে, আমরা চলিতেছি। মহাসমুদ্রের মাঝে যদি এমন একথানি ষ্টীমারে চড়িয়া যাওয়া যায় যে, যাহার কলের ঝন্‌ঝনানি নাই, হেলা-দোলা নাই, তাহা হইলে যেমন আমরা বুঝিতে পারি না যে, ষ্টীমার চলিতেছে কি দাঁড়াইয়া আছে, তেমনি নিঃশব্দ অচঞ্চল পৃথিবীর উপরে চড়িয়া দৌড়াদৌড়ি করিয়াও আমরা তাহার চলা বুঝিতে পারি না। এই কথাটা খুব অদ্ভুত, কিন্তু অদ্ভুত হইলেও সম্পূর্ণ সত্য।

 প্রাতে বিছানা ছাড়িয়া উঠিলেই আমরা সূর্য্যকে পূর্ব্বদিকে আকাশের গায়ে দেখিতে পাই। তার পরে যত বেলা বাড়িতে থাকে, সূর্য্য তত আাকাশের উপরে উঠিতে থাকে; শেষে বারোটার পরে পশ্চিমে হেলিয়া সন্ধ্যার সময়ে পশ্চিম আকাশে সূর্য্য অস্ত যায়। রাত্রিতেও দেখা যায়, চাঁদও সেই রকম করে। চাঁদ যেখানেই থাকুক্, এক-একটু করিয়া পশ্চিম দিকেই চলিতে থাকে এবং শেষে পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। কেবল চাঁদ নয়, রাত্রিতে যে-সকল ছোট-বড় নক্ষত্র আকাশে উদিত হয়, তাহারাও পূর্ব্বদিক্ হইতে ধীরে ধীরে চলিয়া পশ্চিমে অস্ত যায়।

 চন্দ্র, সূর্য্য এবং নক্ষত্রদের এই পূর্ব্ব হইতে পশ্চিমে গিয়া অস্ত যাইবার কারণ তোমরা বলিতে পার কি? পাখী যেমন আমাদের বাড়ীর পূর্ব্বদিকের গাছ হইতে উড়িয়া মাথার উপর দিয়া চলে এবং শেষে পশ্চিম দিকের বটগাছে গিয়া বসে, চন্দ্র সূর্য্য এবং নক্ষত্রগুলি কি সেই রকমে আকাশের উপর দিয়া উড়িয়া চলে? ইহারা পূর্ব্ব হইতে সত্যই যে পশ্চিমে চলিয়া অস্ত যায়, তাহা অস্বীকার করা যায় না, কারণ, ইহা আমরা নিজের চোখেই দেখিতে পাই। কিন্তু পণ্ডিতেরা বলেন,