পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৪১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
উল্কাপিণ্ড
১৯১

আনাই হয় ত রাস্তার ধূলা, কিন্তু তাহার সঙ্গে কিছু কিছু উল্কাপিণ্ডের ছাই মিশানো থাকা একটুও বিচিত্র নয়।

 একজন বৈজ্ঞানিক হিসাব করিয়া বলিয়াছিলেন, প্রতি দিন বা রাত্রিতে আমাদের পৃথিবীর আকাশে অন্ততঃ দুই কোটি ছোট বড় উল্কাপিণ্ড প্রবেশ করে। এই কথা যদি সত্য হয়,—ভাবিয়া দেখ, এই সব উল্কার দেহের ছাই পরিমাণে কত বেশী!

 বৎসরের মধ্যে সব রাত্রিতে একই রকমের উল্কাপাত হয় না। এপ্রিলের ২১শে এবং আগষ্ট মাসের ৯ই, ১০ই ও ১১ই তারিখে যদি আকাশটিকে পরিষ্কার পাও, তবে ঐ কয়েক তারিখের রাত্রিতে তোমরা অনেক উল্কাপাত দেখিতে পাইবে। নভেম্বর মাসটা আমাদের হেমন্তকাল। এই সময়ে আকাশ বেশ পরিষ্কার থাকে। নভেম্বরের ১২ই, ১৩ই, ১৪ই এবং ২৭শে এই চারি তারিখে রাত্রি জাগিয়া যদি তোমরা আকাশ দেখিতে পার, তাহা হইলে দেখিবে, মিনিটে মিনিটে অনেক উল্কা হাউই বাজির মত আকাশের চারিদিকে ছুটাছুটি করিতেছে।

 অনেক দিন আগে আমি নিজে যে এক উল্কাবৃষ্টি দেখিয়াছিলাম, তাহা আর জীবনে ভুলিতে পারিব না। তখন আমি তোমাদের চেয়েও ছোট। সেদিন সন্ধ্যার পর হইতে এত উল্কা পড়িতে আরম্ভ করিয়াছিল যে, বোধ হইতেছিল যেন অগ্নিবৃষ্টি হইতেছে। বোধ হয় নভেম্বর মাসের কোনো এক তারিখে এই ঘটনা হইয়াছিল। বড় হইয়া বংসরে বৎসরে উল্কাবৃষ্টি দেখিবার জন্য রাত্রি জাগিয়াছি, কিন্তু তেমনটি আর দেখিতে পাই নাই। তবুও তোমরা নভেম্বরের ঐ চারিটি দিনে আকাশ দেখিয়ো, অনেক উল্কাপাত নজরে পড়িবে। জ্যোতিষের বইতে পড়িয়াছি, ইংরাজি ১৮৬৬ সালের নভেম্বর মাসের একদিন নাকি ভয়ানক উল্কাবৃষ্টি হইয়াছিল, কিন্তু তখন আমাদের জন্মও হয় নাই, কাজেই তাহার কথা তোমাদিগকে বলিতে পারিব না।