পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গ্রহ-নক্ষত্র

চারিদিকে প্রদক্ষিণ করিতে থাকিবে। পণ্ডিতেরা বলেন, সূর্য্য ল্যাম্পের মত স্থির হইয়া আকাশে দাঁড়াইয়া আছে; আমাদের পৃথিবীটাই কেবল নিজে ঘুরপাক খাইতে খাইতে সূর্য্যের চারিদিকে দিবারাত্রি ঘুরিয়া মরিতেছে। ধরণী হয় ত এক মিনিটে তোমার চারিদিকে ঘুরিয়া আসিতে পারে, কিন্তু পৃথিবী এই রকমে সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করিতে তিনশত পঁয়ষট্টি দিন লয়।

 পণ্ডিতেরা এ-সব কথা স্থির করিয়াছেন বটে, কিন্তু কি রকমে স্থির করিলেন, এখন তাহাই তোমাদিগকে বলিব।

 আমরা যখন রেলের গাড়ীতে চড়িয়া কোনো স্থানে যাই, তখন পথের পাশের তারের বেড়া, টেলিগ্রাফের থাম ও গাছ-পালার দিকে তাকাইলে মনে করি, আমরা যে দিকে যাইতেছি, পথের ধারের ঐ জিনিসগুলা যেন ঠিক তাহার উল্টা দিকে ছুটিয়া চলিয়াছে। নৌকায় চড়িয়া যখন যাওয়া যায়, তখনো নদীর ধারের গাছ-পালা ঘর-বাড়ী ও ঘাটে বাঁধা নৌকাগুলিকেও ঐ রকম উল্টা দিকে চলিতে দেখা যায়। বলা বাহুল্য, ঘর-বাড়ী ও গাছ-পালা চলে না, চলি আমরাই। কিন্তু মনে হয়, যেন পথের পাশের সব জিনিসই ছুটিয়া চলিয়াছে।

 পণ্ডিতেরা আমাদের চোখের এই ভুলটাকে দেখিয়া বলেন, আমরা যেমন রেলের গাড়ী বা নৌকায় চড়ি, আমরা সকলেই সেই প্রকারে পৃথিবীতে চড়িয়া বসিয়া আছি। কিন্তু পৃথিবী স্থির নাই, সে আমাদের ঘাড়ে লইয়া লাট্টুর মত বন্-বন্ করিয়া ক্রমাগত পশ্চিম হইতে পূর্ব্ব দিকে ঘুরিতেছে। কাজেই সূর্য্য তারা প্রভৃতি যে-সকল জিনিস আকাশে স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া আছে, তাহাদিগকে আমরা উল্টাদিকে অর্থাৎ পূর্ব্ব হইতে পশ্চিম-দিকে চলিতে দেখি।

 গাড়ী বা নৌকায় চড়িলে যাহা দেখিতে পাই, পৃথিবীর মত একটা প্রকাণ্ড গাড়ীতে চড়িলে যে, আমরা তাহাই দেখিতে পাইব, এ সম্বন্ধে