পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
আমাদের পৃথিবী

কোনো সন্দেহই হইতে পারে না। আমরা পূর্ব্বে বলিয়াছি, গাড়ী বা নৌকা যখন ঝাঁকুনি না দিয়া নিঃশব্দে চলে, তখন চোখ্ বুজিয়া বসিয়া থাকিলে, চলিতেছি কি না তাহা আমরা বুঝিতে পারি না। জানালায় উঁকি দিলে যখন দেখা যায় যে, পথের পাশের গাছ-পালা বা নদীর ধারের ঘর-বাড়ী চলিতেছে, তখন এই সব দেখিয়াই ঠিক করিতে হয় যে, গাড়ী বা নৌকা চলিতেছে। পৃথিবী ঝাঁকুনি না দিয়া তাহার উপরকার মানুষ-গরু ঘর-বাড়ী ও পাহাড়-পর্ব্বতকে বুকে লইয়া নিঃশব্দে লাট্টুর মত ঘুরিতেছে, কাজেই পৃথিবীর ঘোরা আমরা বুঝিতে পারি না। পথের ধারের গাছ-পালা স্থির আছে, কি চলিতেছে দেখিয়া যেমন আমরা গাড়ী চলিতেছে কি না বুঝিয়া লই, এখানেও তেমনি আকাশের চন্দ্র সূর্য্য ও নক্ষত্রেরা চলিতেছে কি না দেখিয়া, পৃথিবী চলিতেছে কি না বুঝিতে হয়। কিন্তু প্রতিদিনই সূর্য্য পূর্ব্বে উদিত হইয়া পশ্চিমে অস্ত যাইতেছে এবং রাত্রিতেও নক্ষত্রেরা দলে দলে পূর্ব্ব হইতে পশ্চিমে ডুবিতেছে। কাজেই স্বীকার করিতে হয় যে, আমাদের পৃথিবী পশ্চিম হইতে পূর্ব্বপাকে লাট্টুর মত ঘুরিতেছে বলিয়াই, তাহাদিগকে আমরা পূর্ব্ব হইতে পশ্চিম দিকে চলিতে দেখিতেছি।

 সূর্য্যের উদয় হইলে দিন হয় এবং তাহা অস্ত গেলেই রাত্রি হয়। কাজেই সূর্য্য আমাদের দিন ও রাত্রির কারণ, এ কথা আমরা স্পষ্ট বুঝিতে পারি। পৃথিবী লাট্টুর মত ঘুরপাক খায় বলিয়াই যে, দিন-রাত্রি হয়, তাহা এখন বুঝা যাইবে।

 মনে করা যাউক, যেন টেবিলের উপরে একটা ল্যাম্প্ জ্বলিতেছে। এটা যেন আমাদের ছোট সূর্য্য। সূর্য্য যেমন আকাশের মাঝে দাঁড়াইয়া তাপ ও আলোক ছড়ায়, টেবিলের উপর দাঁড়াইয়া ল্যাম্পও চারিদিকে সেই প্রকারে তাপ ও আলোক ছড়াইতেছে।