পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫২
গ্রহ-নক্ষত্র

বলিতে হয়, আমাদের তিথির বৎসর অর্থাৎ চান্দ্র-বৎসর তিন শত চুয়ান্ন দিনে শেষ হইয়া পড়ে। কিন্তু প্রচলিত বৎসর শেষ হইতে তিন শত পঁইষট্টি দিন ছয় ঘণ্টা সময় লয়। কাজেই চান্দ্র-বৎসর প্রত্যেক প্রচলিত বংসরে এগারো দিন ছয় ঘণ্টা করিয়া আগে চলে।

 অমিল জিনিসটাই খারাপ। তার পরে যদি সেই অমিল বৎসরের পর বৎসর জমিয়া খুব বড় হইয়া দাঁড়ায়, তখন তাহা আরো খারাপ দেখায়।

 মনে কর, তোমাদের বাড়ীতে রোজ যে দুই টাকার বাজার করা হয়, বাড়ীর কর্ত্তা তোমাকেই তাহার হিসাব রাখিতে বলিলেন। শাক, বেগুন, ঘি তেল সকলেরি হিসাব তুমি খাতায় লিখিয়া ঠিক্ দিলে, কিন্তু দুই পয়সার যে লবণ কেনা হইয়াছিল তাহা লিখিতে ভুলিয়া গেলে। তাহা হইলে দেখ,—দুই টাকার হিসাব লিখিতে গিয়া তোমার দুই পয়সার অমিল হইল। কর্ত্তা হিসাব দেখিলেন এবং বলিলেন, দুই টাকার মধ্যে দুই পয়সার ভুল বেশি কিছুই নয়। কিন্তু তুমি যদি এক বৎসরের তিন শত পঁইষট্টি দিন ধরিয়া এই রকমে দুই পয়সার অমিল করিতে থাক, বৎসরের শেষে কত অমিল হয় ভাবিয়া দেখ দেখি। সাত শত ত্রিশ পয়সা অর্থাৎ এগারো টাকা সাড়ে ছয় আনার হিসাব বাদ পড়িয়া যায়। এই অমিলকে কখনই কম বলা যায় না। সেই রকম প্রচলিত বৎসর ও চান্দ্রবৎসরের মধ্যে যে এগারো দিনের তফাৎ আছে, তাহা যদি কেবল এক বৎসরের জন্য হইত তাহা হইলে ক্ষতি ছিল না। কিন্তু তিন বৎসরে যখন ঐ এগারো দিন বাড়িতে বাড়িতে তেত্রিশ দিন এবং পাঁচ বৎসরে পঞ্চান্ন দিন হইয়া দাঁড়ায়, তখন তাহা নজরে পড়ে। এই সময়ে এই তফাৎ ঘুচাইবার জন্য চেষ্টা না করিলে চলে না।

 তোমরা হয় ত ভাবিতেছ, প্রচলিত বৎসর ও চান্দ্রবৎসরের এই তফাৎ থাকিলে ক্ষতি কি! কিন্তু ক্ষতি যথেষ্ট আছে।