পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৪৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২২
গ্রহ-নক্ষত্র

বাহির হইয়া ভারত মহাসাগর পার হওয়া গেল; তার পরে সুয়েজ খালের ভিতর দিয়া ও ভূমধ্য-সাগর অতিক্রম করিয়া ইংলণ্ডের কাছে এট্‌লাণ্টিক্ মহাসাগরে পড়া গেল। তার পরে আমেরিকা পার হইয়া প্রশান্ত মহাসাগরের জাপান চীন ইত্যাদি ছাড়িয়া আবার কলিকাতায় পৌঁছানো গেল। পৃথিবীকে বেষ্টন করিয়া অনেকেই আজকাল এই রকমে ভ্রমণ করেন। অবশ্য জাহাজে করিয়া যাইতে সময় বেশি লাগে। মনে কর, পৃথিবী ঘিরিয়া একটা প্রকাণ্ড রেলের লাইন গিয়াছে এবং আমরা সেই লাইনের যেন একটা ডাক-গাড়ীতে চাপিয়াছি। গাড়ী কোনো ষ্টেশনে না থামিয়া যেন ঘণ্টায় পঞ্চাশ মাইল বেগে দিবারাত্রি হু হু করিয়া চলিয়াছে। এ রকমে পৃথিবী ঘুরিয়া আসিতে কত সময় লাগে বলিতে পার কি? আমরা হিসাব করিয়া দেখিয়াছি, তিন সপ্তাহের অর্থাৎ একুশ দিনের বেশি সময় লাগে না।

 এখন মনে কর, যেন আমাদের সূর্য্যকে ঘিরিয়াও ঐ রকম একটা রেলের লাইন আছে এবং আমরা কয়েক জন তাহারি এক ডাকগাড়ীতে চাপিয়া বসিয়াছি। গাড়ী বাঁশী বাজাইয়া হু হু করিয়া অবিরাম দিনরাত্রি চলিতে লাগিল। আমরা কত দিনে সূর্য্যের উপরে একবার বেড় দিয়া চলিয়া আসিব বলিতে পার কি? আমরা ইহারো একটা হিসাব করিয়া দেখিয়াছি। গাড়ীখানা ঠিক সাত বৎসর ধরিয়া দিবারাত্রি না চলিলে সূর্য্যকে বেড় দিতে পারিবে না, অর্থাৎ আমাদের সাত বৎসরের খাবার ও কাপড়-চোপড় ডাকগাড়ীর পিছনের একখানি মাল-গাড়ীতে বোঝাই দিয়া তবে যাত্রা আরম্ভ করিতে হইবে। পৃথিবীর উপর দিয়া ঘুরিয়া আসিতে কুড়ি একুশ দিন লাগে, আর সূর্য্যের উপর দিয়া ঘুরিয়া ফিরিতে সাত বৎসর লাগে! ভাবিয়া দেখ পৃথিবী কত ছোট এবং সূর্য্য কত বড়!

 আমরা কিন্তু এত বড় সূর্য্যকেও পৃথিবী হইতে একখানি