পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৪৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সূর্য্য
২৩

রেকাবির মত দেখি। কাজেই বুঝা যাইতেছে, সূর্য্য পৃথিবী হইতে অনেক দূরে আছে। অনেক দূর হইতে দেখিলে, সব জিনিসকেই ছোট দেখায়। খুব বড় ঘুঁড়িতে শক্ত সূতা বাঁধিয়া যখন উড়ানো যায়, তখন সেটি কত ছোট দেখায় দেখিয়াছ কি? বোধ হয় তাহা যেন তোমার এই বইখানির মত ছোট। কিন্তু নীচে নামাইয়া দেখিলে বুঝা যায়, ঘুঁড়ি কত বড়। তাই তোমাদের বলিতেছিলাম, সূর্য্য যে অনেক দূরে আছে, তাহা উহার রেকাবির মত ছোট আকারটি দেখিলেই বুঝা যায়। অনেক দূরে না থাকিলে, এত বড় প্রকাণ্ড জিনিসটাকে কেন এত ছোট দেখাইবে?

 যাহা হউক, জ্যোতির্ব্বিৎ পণ্ডিতেরা পৃথিবী হইতে সূর্য্যের দূরত্ব স্থির করিয়াছেন। তাঁহাদের মোটামুটি হিসাবে এই দূরত্বের পরিমাণ নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল। সূর্য্য পৃথিবী হইতে কত দূরে আছে বুঝিলে কি? এক শতের দশ গুণে হাজার হয়, হাজারের এক শত গুণে এক লক্ষ হয় এবং এক লক্ষের এক শত গুণে এক কোটি হয়। আমাদের কাছ হইতে সূর্য্য এই রকম নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল দূরে আছে। এবার বুঝিলে কি?—বোধ হয় বুঝিলে না। পৃথিবীতে আমরা দুই মাইল, চার মাইল, না হয় হাজার মাইল লইয়া হিসাব করি। এখান হইতে ইংলণ্ড মোটে দশ হাজার মাইল দূরে, তাই শুনিয়াই আমরা মনে ভাবি, এত দূর দেশ বুঝি আর নাই। কাজেই নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল যে কত দূর, আমরা তাহা কল্পনাই করিতে পারি না।

 আচ্ছা, একটা উদাহরণ দিয়া সূর্য্যের দূরত্বটা বুঝাইবার চেষ্টা করা যাউক। আগেকার মত মনে কর, যেন আমাদের পৃথিবী হইতে একটা রেলের লাইন শূন্যের উপর দিয়া আকাশ ভেদ করিয়া সূর্য্যে পৌঁছিয়াছে এবং এই লাইনে যেন একটা গাড়ী সূর্য্যে পৌঁছিবার জন্য ঘণ্টায় ত্রিশ মাইল বেগে দিবা-রাত্রি হুস্ হুস্ করিয়া চলিয়াছে। কত দিনে ইহা সূর্য্যে