পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৪৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৪
গ্রহ-নক্ষত্র

গিয়া পৌঁছিবে, এখন বলিতে পার কি?—আমরা হিসাব করিয়া দেখিয়াছি, এই রকমে সূর্য্যে পৌঁছিতে গেলে তিনশত পঞ্চাশ বৎসর রেলের গাড়ীতে থাকিতে হইবে, অর্থাৎ মোগল বাদসাহ আকবর যে দিন সিংহাসনে আরোহণ করেন, সেই দিন যাত্রা সুরু করিলে গাড়ীখানা সম্রাট পঞ্চম জর্জ্জের দিল্লীতে অভিষেকের পূর্ব্বে কখনই সূর্য্যে পৌঁছিতে পারিবে না। কি ভয়ানক দূরত্ব!

 কিন্তু এত দূরে থাকিয়াও ত সূর্য্যের তেজ কম নয়! চৈত্র-বৈশাখ মাসে সূর্য্যের তেজের কথা মনে কর দেখি;—সূর্য্য যেন তখন আগুন বৃষ্টি করিতে থাকে এবং তার আলোই বা কত!

 চাঁদকে আমরা দূর হইতে সূর্য্যের মতই বড় দেখি, কিন্তু চাঁদ ত এত আলো দেয় না এবং তার কিরণও ত গরম নয়। এই সব দেখিলে মনে হয় না কি যে সূর্য্যটা আগুন দিয়া গড়া?

 সত্যই সূর্য্যকে আগুনে ঘিরিয়া আছে। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি বৎসর ধরিয়া এই প্রকাণ্ড আগুন সূর্য্য-লোকে জ্বলিতেছে। তাহারি তাপ আমরা এত দূরে পৃথিবীতে থাকিয়া বুঝিতে পারিতেছি এবং তাহারি আলোক আমাদের নিকট আসিয়া পৌঁছায় বলিয়া, আমরা পথ ঘাট মাঠ দেখিয়া চলিয়া-ফিরিয়া বেড়াইতেছি। ভাবিয়া দেখ, সেই প্রকাণ্ড সূর্য্যকে ঘিরিয়া কি আগুনই জ্বলিতেছে! আমাদের রান্নাঘরের উননে যখন আগুন জ্বলে, তখন তাহার তাপ হয় ত দু-হাত কি দশ-হাত তফাৎ হইতে বুঝিতে পারি। কোটি কোট মাইল দূরের তাপ যখন আমাদের কাছে এত অধিক বলিয়া বোধ হয়, তখন সূর্য্যের উপরকার সেই তাপ কত বেশি, মনে মনে ভাবিয়া দেখ।

 কিছু না জ্বলিলে আগুন হয় না। উননে কাঠ প্রভৃতি পুড়িলে তাপ জন্মে এবং তাপে কাঠের ছোট ছোট অণু কয়লা ও নানা রকম গ্যাস্ জ্বলিয়া লাল হয়, তাই উননের কাঠ বা কয়লা আলো ও তাপ দেয়।