পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩০
গ্রহ-নক্ষত্র

যায়, তাহা সম্ভবত এই-রকম ঝড়েই জন্মে বলিয়া পণ্ডিতেরা ঠিক করিয়াছেন।

 সূর্য্যের আলোক-মণ্ডলটা বড় ভয়ঙ্কর জিনিস। লক্ষ লক্ষ মাইল জুড়িয়া নানা-রকম বাষ্প ইহাতে জ্বলে এবং পোড়ে। কাজেই জ্বলন্ত বাষ্প ভয়ানক বেগে ছুটাছুটি করিয়া এবং ধাক্কাধাক্কি দিয়া সূর্য্যে প্রায়ই ঝড় উঠায়। ঝড় ছোটখাটো হইলে আমরা এতদূরে থাকিয়া তাহার সন্ধানই করিতে পারি না; কিন্তু যখন বড় ঝড় উঠে, তখন আমরা তাহার পরিচয় পৃথিবীতে বসিয়া-বসিয়াই পাইতে থাকি। তখন ঝড়ের জোরে সূর্য্যের আলোক-মণ্ডলের জ্বলন্ত বাষ্প স্থানে স্থানে ছিন্ন-ভিন্ন হইয়া যায়; কাজেই সেই সকল জায়গার ফাঁকে উহার আসল দেহটা আমাদের নজরে পড়িতে থাকে। তোমাদের পূর্ব্বেই বলিয়াছি, আলোক-মণ্ডলের তাপ ও আলোই সূর্য্যকে এত উজ্জ্বল ও গরম করিয়াছে। যে ঘন বাষ্প দিয়া সূর্য্যের আসল দেহটা নির্ম্মিত, তাহা খুব উজ্জ্বল নয় এবং গরমও নয়। এইজন্যই অত্যন্ত উজ্জ্বল আলোকমণ্ডলের ফাঁক দিয়া সূর্য্যের দেহটা কালো দেখায়।

 ঝড়ের সময়ে আলোক-মণ্ডলের উজ্জ্বল বাষ্প সরিয়া গিয়া এই রকমে যে কালো কালো গর্ত্ত উৎপন্ন করে, সেই-গুলিকেই আমরা দূর হইতে সূর্য্যের কলঙ্কের আকারে দেখি। আমাদের বায়ুমণ্ডলে ঝড় উঠিলে, তাহা হয় ত দু’ঘণ্টা চার ঘণ্টা, না হয় একদিন দুইদিন থাকে। কিন্তু সূর্য্য যেমন প্রকাণ্ড জিনিস, তাহার ঝড়ও তেমনি প্রকাণ্ড। একবার ঝড় উঠিলে তাহা পনেরে কুড়ি দিনের কমে থামে না। কখনো কখনো থামিতে এক মাসের উপরেও সময় লয়। কাজেই ঝড়ে সূর্য্যের আলোক-মণ্ডলে যে গর্ত্ত উৎপন্ন হয়, তাহাও ঐ-রকম একমাস-পর্য্যন্ত থাকে। একবার একটা ঝড় উঠিয়াছিল, তাহা ছয় মাস পর্য্যন্ত ছিল। এই কারণে সূর্য্যের উপরে একবার কলঙ্ক দেখা দিলে, তাহা খুব শীঘ্র