পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৮২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৬
গ্রহ-নক্ষত্র

প্রতিদিনই জালাটা এক একটু করিয়া খালি হইতেছে; কিন্তু এই ক্ষয় এত সামান্য যে, তুমি দু-বছরে কি দশ বৎসরেও চোখে দেখিয়া বুঝিবে না যে, জালা খালি হইয়া যাইতেছে। সূর্য্যের আকারে ছোট হওয়াও এই রকমের; এখন প্রতি বৎসরে সে এমন তিলে তিলে ছোট হইতেছে যে, দু-হাজার দশ হাজার বৎসরে আমরা সূর্য্যকে খুব ভাল যন্ত্র দিয়া পরীক্ষা করিয়াও ছোট দেখিব না।

 কিন্তু খুব অনেক দিন পরে, হয় ত লক্ষ লক্ষ বৎসর পরে, এই তিলে তিলে কমার জন্য সূর্য্যকে নিশ্চয়ই ছোট হইতে দেখা যাইবে। তখন মানুষ পৃথিবীতে থাকিবে কি না জানি না, যদি থাকে তবে তাহারা সূর্য্যকে ছোট দেখিয়া অবাক্ হইয়া যাইবে। কেবল তাহাই নয়, তখন তাহারা দেখিবে সূর্য্য ছোট হইতে হইতে এমন ঘন হইয়া দাঁড়াইয়াছে যে, সে আর ছোট হইতে পারিতেছে না, সেই দিনই মহাপ্রলয় আরম্ভ হইবে। কারণ সূর্য্য তথন যে তাপ ক্ষয় করিবে, তাহার আর পূরণ হইবে না। কাজেই দিনে দিনে ঠাণ্ডা হইয়া সূর্য্য একদিন একেবারে নিভিয়া যাইবে। পৃথিবী আর তাপ-আলোক না পাইয়া ঘোর অন্ধকারে বরফের চেয়েও বেশী ঠাণ্ডা হইয়া পড়িবে। মেঘ হইবে না, বৃষ্টি পড়িবে না, নদী চলিবে না, বাতাসও বহিবে না। সমুদ্রের জল শক্ত বরফ হইয়া দাঁড়াইবে। সূর্য্যের আলোতে বাড়িয়া যে-সকল গাছ-পালা আমাদের খাদ্য জোগায়, তাহারা চিরদিনের জন্য লোপ পাইয়া যাইবে এবং সঙ্গে সঙ্গে মানুষ পশু প্রভৃতি প্রাণীদিগের চিহ্নমাত্রও পৃথিবীতে থাকিবে না।

 সূর্য্য নিভিয়া যাওয়ার পরে পৃথিবীর এই দুর্দ্দশার কথা মনে করিলে সত্যই ভয় হয়। কিন্তু আপাততঃ ভয়ের কারণ নাই, লক্ষ লক্ষ বৎসর পরে পৃথিবীতে এই মহাপ্রলয় উপস্থিত হইবার অনেক আগে হয়ত মনুষ্য জাতি পৃথিবী হইতে লোপ পাইয়া যাইবে! আমাদের এই