পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৯৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৬
গ্রহ-নক্ষত্র

ভয়ানক আগুন উঠিত এবং গলা ধাতুর স্রোত বাহির হইয়া চারিদিক ডুবাইয়া দিত, এখনো এত দূর হইতে আমরা তাহা বুঝিতে পারি।

 পূর্ব্বপৃষ্ঠায় চাঁদের একটা আগ্নেয় পর্ব্বতের বড় ছবি দিলাম। ছবি দেখিলেই বুঝিতে পারিবে, চাঁদের উপরকার কতক জায়গা যেন খুব উঁচু প্রাচীর দিয়া ঘেরা আছে এবং তাহার মাঝে যেন কয়েকটা উঁচু-উঁচু পাহাড় আছে। চাঁদের আগেকার ছবিতে যে-সব ছোট গোলাকার আগ্নেয় পর্ব্বত দেখিয়াছ, তাহাদের আকৃতি ঠিক এই রকমের অর্থাৎ চারিদিকে উঁচু প্রাচীর, মাঝে একটা বা দুইটা উঁচু পাহাড়। যে আগ্নেয় পর্ব্বতের ছবিটা পূর্ব্ব পৃষ্ঠায় দিলাম, তাহার নাম কোপার্‌নিকাস্।

 “কোপার্‌নিকাস্” নাম শুনিয়া অবাক্ হইও না; এ নাম আমাদেরই দেওয়া। তোমার যদি দুইটা পোষা কুকুর থাকে, এবং তাহাদের একটা কালো ও একটা শাদা হয়, তাহা হইলে প্রত্যেককে এক-একটা পৃথক্ নাম দিতেই হয়। তাহা না হইলে যখন তুমি কালো কুকুরটাকে কাছে আানিতে চাও, তখন কেবল তুতু করিয়া ডাকিলে দুইটাই কাছে আসিবে। কিন্তু যদি তুমি কালো কুকুরটিকে “কালু” এবং শাদাটিকে “টেবি” বলিয়া ডাক, তখন কালু বলিয়া ডাকিলে কালো কুকুরই কাছে আসিবে এবং “টেবি” বলিয়া ডাকিলে শাদাটাই কাছে আসিয়া তোমার পায়ের গোড়ায় লুটাইবে। ইহাও যেন সেই-রকম; চাঁদের বড় বড় আগ্নেয় পর্ব্বতগুলি ও সমুদ্রগুলির এক-একটা নাম দেওয়াতে, একটা পর্ব্বতের সঙ্গে আর একটা পর্ব্বতের গোলমাল হয় না।

 চাঁদের পর্ব্বতের নাম দেওয়ার কথায় একটা ঘটনা মনে পড়িয়া গেল। তিন চার বৎসর পূর্ব্বে আমি তোমাদেরি মত ছোট ছেলেদের দূরবীণ দিয়া চাঁদ দেখাইতেছিলাম। চাঁদের আগ্নেয় পর্ব্বত, গুহা, পাহাড়ের শ্রেণী ও উঁচুনীচু মাটি দেখিয়া তাহারা অবাক্ হইয়া যাইতেছিল।