পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৯৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের আগ্নেয় পর্ব্বত
৬৭

নিকটে একটি অল্পশিক্ষিত ভৃত্য দাঁড়াইয়া ছিল; তাহাকেও দূরবীণ দিয়া চাঁদ দেখাইলাম এবং কোন্ পাহাড়টার কি নাম তাহাও বলিতে লাগিলাম। পৃথিবীর মত চাঁদেও পাহাড় পর্ব্বত আছে দেখিয়া সে খুবই আশ্চর্য্য হইল, কিন্তু সকলের চেয়ে আশ্চর্য্য হইল চাঁদের পাহাড়গুলির নাম শুনিয়া। সে বলিতে লাগিল “মহাশয়, কল দিয়া ত চাঁদের পাহাড় দেখাইলেন; কিন্তু পাহাড়গুলির নাম জানিলেন কি রকমে?”

 আমরা ত হাসিয়াই খুন্। চাঁদের পাহাড় দেখিয়া লোকটা বিস্মিত হইয়া ভাবিতেছিল, আমরা কোনো যন্ত্র দিয়া পাহাড়ের নামগুলাও হয় ত চাঁদ হইতে পৃথিবীতে আমদানি করিয়াছি। আমরা তাহাকে বুঝাইয়া দিলাম, পাহাড় পর্ব্বত গাছপালা বা জীবজন্তুর নাম বিধাতা তাহাদের গায়ে লিখিয়া দেন নাই, তাহাদিগকে চিনিয়া লইবার জন্য মানুষই তাহাদের এক একটা নাম দেয়।

 চাঁদের আগ্নেয় পর্ব্বতের বিবরণ বলিতে গিয়া অনেক বাজে কথা বলিয়া ফেলিলাম। এখন আবার “কোপার্‌নিকাস্” আগ্নেয় পর্ব্বতের ছবিটি দেখা যাউক। ইহার চারিদিকে যে প্রাচীরের মত পাহাড় বেড়িয়া রহিয়াছে, তাহা কম উঁচু নয়। পণ্ডিতেরা হিসাব করিয়া। দেখিয়াছেন, ইহার উচ্চতা দুই মাইলের উপরে, মাঝের পাহাড়ের উচ্চতা আরো বেশি। তাহার পরে যে জায়গা ঘেরা রহিয়াছে, মাপিলে তাহা প্রায় ছাপ্পান্ন মাইলের সমান হয়। তাহা হইলে দেখ, ঐ পাহাড়-ঘেরা গোলাকার জায়গাটাও নিতান্ত ছোটখাটো স্থান নয়। ছাপ্পান্ন মাইল প্রশস্ত একটা গোলাকার স্থান দুই মাইল উঁচু পাহাড় দিয়া ঘেরা এবং ঘেরা জায়গার মধ্যে আবার দুই একটা উঁচু চূড়াযুক্ত পাহাড়। চাঁদের সকল আগ্নেয় পর্ব্বতগুলিই যে এত বড় তাহা নয়। কোনোটিকে ইহা অপেক্ষা অনেক ছোটও দেখা গিয়াছে, কিন্তু প্রত্যেক আগ্নেয়গিরির গঠন ঠিক একই রকমের।