পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
৫৫

প্রভৃতি গুরুজনেরা তাহাদিগকে ঐ সকল শ্লোক অভ্যাস করাইতেন। যে শ্লোকের আদিতে “মা নিষাদ” আছে সেই চিরবিখ্যাত শ্লোক সর্ব্বপ্রথমে মুখস্থ করাইতেন। এ রীতিটা কেন উঠিয়া গেল আমরা বুঝিতে পারি না। যে শ্লোকটী সংস্কৃত ইতিহাস পুরাণ ও উপপুরাণের ভিত্তি স্বরূপ, যে সকল অনুষ্টপ শ্লোক দ্বারা সংস্কৃত সাহিত্যরূপ বৃহৎ ও সুশোভন অট্টালিকার অধিকাংশ বিরচিত, তাহার মধ্যে যেটী সর্ব্বপ্রথম রচিত হয়, যাহা রামায়ণে ঐ ছন্দের অন্যান্য শ্লোকের মধ্যে পবিত্র স্বভাব মহর্ষি বাল্মীকির পবিত্র রসনা হইতে দেব প্রেরণা প্রভাবে প্রথমে বিনিঃসৃত হইয়া নিজ শ্লোক রচয়িতাকেও বিস্মিত করিয়াছিল, যে ছন্দের শ্লোকে অবনীমণ্ডল পবিত্রকারী পুণ্য গাথা রামায়ণ বিরচিত, যে শ্লোক জীবের প্রতি কারুণ্যরসের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শক, সে শ্লোক যদি অগ্রে বালকদিগকে কণ্ঠস্থ করান উচিত না হয়, তবে কোন শ্লোক করান উচিত? রোগের সময়ে খই খাইবার প্রথা যেমন বিনা কারণে উঠিয়া গিয়া সাগু খাইবার প্রথা প্রচলিত হইয়াছে, তেমনি বিনা কারণে “মা নিষাদ” কণ্ঠস্থ করাইবার রীতি উঠিয়া গিয়াছে। খই অতি শুভ্র পবিত্র লঘুপাক দ্রব্য, তাহাকে তাড়াইয়া দিয়া সাগু তাহার স্থান কেন অধিকার করিল তাহা আমরা বুঝিতে পারি না। সেই “মা নিষাদ” বালকদিগকে কণ্ঠস্থ করাইবার রীতি