কেন উঠিয়া গেল বুঝিতে পারি না। “মা নিষাদ” প্রয়োগাদ্য শ্লোকটী হিন্দুজাতির একটী কীর্ত্তিস্তম্ভ ও উচ্চ জাতীয় স্বভাবের মহত্ত্বের পরিচায়ক। সেই শ্লোক কণ্ঠস্থ না করান পরিতাপের বিষয় সন্দেহ নাই। প্রাচীন কালে গ্রীসদেশের লোকেরা যেমন থিওগিনস্ (Theoginus) কবি রচিত নীতিসূত্র বালকদিগকে অভ্যাস করাইত তেমনি সে কালে আমাদিগের দেশে গুরুজনেরা বালকদিগকে চাণক্য শ্লোক অভ্যাস করাইতেন। মধুসূদন বসুজা মহাশয় রামনারায়ণ বাবুকে হাঁটুর উপর বসাইয়া চাণক্যের শ্লোকও অভ্যাস করাইতেন। বালকদিগকে হিতোপদেশগর্ভ কবিতা অভ্যাস করান অতি উত্তম রীতি। দেখা যায় মনুষ্যের বিদ্যালয় পরিত্যাগের পর সংসার পথে বিচরণ করিবার সময় তাঁহার বিদ্যালয়ে কণ্ঠস্থ করা পদ্যময় হিতোপদেশ অনেক সময়ে তাঁহার সাংসারিক কার্য্য নিয়মিত করে। চাণক্য শ্লোকে অনেক হিতোপদেশ আছে। বালকদিগকে তাহা অভ্যাস করান উত্তম রীতি বলিতে হইবেক। বালকদিগকে তাহা অভ্যাস করাইবার রীতি কেন উঠিয়া গেল তাহা আমরা বুঝিতে পারি না। নিদান পক্ষে বাঙ্গালা ভাষায় ঐ প্রকার নীতিসূত্র বিরচিত হইবার পূর্ব্বে ঐ রীতি উঠাইয়া দেওয়া ভাল কায হয় নাই। মধুসূদন বসু সে কালের রীত্যনুসারে রামনারায়ণ বাবুকে ইংরাজী শব্দের মর্ম্মও অভ্যাস করাইতেন যথা, গড, ঈশ্বর; লার্ড ঈশ্বর; আই, আমি;
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
