পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
৫৯

ইংরাজী ভাষা কহিতে ও লিখিতে পারিব। ইংরাজের ন্যায় ইংরাজী কহিতে ও লিখিতে পারিবার জন্য আমরা কত কষ্ট স্বীকার না করি। কেন রে বাপু! কি দায় পড়িয়া গিয়াছে? কিন্তু না করিলেও নয়। আমাদিগের কোন বন্ধু ইংরাজী বিলক্ষণ জানেন, তথাপি তাঁহার কখন কখন ইংরাজী উচ্চারণ করিবার বা লিখিবার সময় ভুল হয়। তাঁহার কোন ইংরাজ বন্ধু সেই ভুল ধরিলে তিনি তাহাতে লজ্জিত না হইয়া অম্লানবদনে বলেন, “It is a language foreign to me.” এ বিষয়ে তাঁহার নির্লজ্জতা দেখিয়া আমরা বিস্মিত হই। ইংরাজী ভাষা সামান্যরূপে আয়ত্ত করিতে প্রায় আমাদিগের বিশ বৎসর লাগে। একটা ভাষা সামান্যরূপে শিখিতে বিশ বৎসর! কি ভয়ানক কথা! বাঙ্গালী সচরাচর হদ্দ চল্লিশ বৎসর বাঁচে। তাহার অর্দ্ধেক জীবন যদি একটা বিদেশীয় ভাষা শিখিতে গেল, তবে আর কি হইল? আমাদিগের মাতৃভাষা যদি সেরূপ সম্পন্নশালিনী হইত তাহা হইলে এই বিশ বৎসরে কেবল সেই ভাষার পুস্তক পাঠ করিলে আমরা কতই শিখিতাম তাহার ইয়ত্তা করা যায় না। এতদ্ব্যতীত যখন বিবেচনা করা যায় যে ইংরাজী ভাষা অধ্যয়ন জন্য আমরা শারীরিক স্বাস্থ্য নষ্ট করিয়া চিররোগী হইয়া পড়িতেছি, তখন ইংরাজী ভাষার শিক্ষার প্রতি বিশেষ বিরাগ জন্মে।