পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।

আনন্দ বাবুর জ্বরবিকার হয়। পীড়াক্রান্ত হইয়া বাদলগ্রামের বাটীতে আইসেন, তথায় তাঁহার মৃত্যু হয়।

 আনন্দকিশোর বাবু রামমোহন রায়ের শিষ্য ছিলেন। সে কালের ব্রাহ্মদিগের কিরূপ ধর্ম্মমত ছিল পাঠকবর্গ সে বিষয়ে কৌতুহলাক্রান্ত হইতে পারেন। আনন্দকিশোর বাবু বৈদান্তিক ছিলেন। জীবাত্মা পরমাত্মা অভেদ, জগৎ স্বপ্নবৎ, নির্ব্বাণ মুক্তি এই সকল মতে বিশ্বাস করিতেন। একদিন তিনি, রামনারায়ণ বাবু ও কলিকাতা সিমুলিয়া নিবাসী পরম বৈষ্ণব নন্দলাল বাবু এই তিন জনে বসিয়া ধর্ম্মালোচনা করিতেছিলেন। রামনারায়ণ বাবু তখন হিন্দ কালেজে পড়েন। নির্ব্বাণ মুক্তির বিষয়ে কথা হইতেছিল। আনন্দকিশোর বাবু নির্ব্বাণ মুক্তি মত সমর্থন করিতেছিলেন। নন্দলাল বাবু বিদায় হইয়া সিঁড়িতে নামিবার সময় রামনারায়ণ বাবুকে চুপি চুপি বলিলেন, “বাপু! তোমার বাবার মতে তুমি বিশ্বাস করিও না; দেখ চিনি হবার চেয়ে চিনি খাওয়া ভাল।” মৃত্যুসময়ে যখন আনন্দ বাবু তাঁহার গ্রামের আদ্য গঙ্গার ঘাটে নীত হয়েন, তখন তাঁহার পরম বন্ধু ভূতপূর্ব্ব দারোগা শ্যামচাঁদ ঘোষ তাঁহার নিকট শঙ্কর ভাষ্য পাঠ করিতে লাগিলেন। আনন্দ বাবু প্রণব জপ করিতে করিতে প্রাণত্যাগ করিলেন। মৃত্যুর পর দৃষ্ট হইল অঙ্গুলির উপর অঙ্গুলি রহিয়াছে। আনন্দ বাবু হাফেজ, জেলালুদ্দীন রুমি প্রভৃতি সুফী সম্প্রদায়স্থ