পারস্য কবির কবিতা আবৃত্তি করিতে বড় ভাল বাসিতেন। পাঠকবর্গ অবশ্য জ্ঞাত আছেন যে বৈদান্তিক ও সুফীদিগের মতের পরস্পর অনেক সাদৃশ্য আছে। কিন্তু আনন্দ বাবু নিজের ধর্ম্মমত “Universal Religion” অর্থাৎ বিশ্বজনীন ধর্ম্ম বলিতেন আর ভাবে গদগদ হইতেন। যখন “Universal Religion” বলিতেন তখন তদ্দারা বৈদান্তিক মত সে বিশ্বজনীন ধর্ম্ম বুঝাইতেন এমন বোধ হয় না। একমাত্র নিরাকার অদ্বিতীয় পরমেশ্বরে বিশ্বাস সকল ধর্ম্মের মূলে আছে ঐ বাকা দ্বারা ইহাই কেবল বুঝাইতেন সন্দেহ নাই। আনন্দ বাবু ক্রিয়াকলাপ বিষয়ে অতিশয় শিথিলতা প্রকাশ করিতেন। আনন্দ বাবু বাৎসরিক শ্রাদ্ধ করা ছাড়িয়া দিয়াছিলেন, তৎপরে রামনারায়ণ বাবুও তাহা করা ছাড়িয়া দিলেন। তৎপরে তাহা করিবার ভার বংশের একটা নিতান্ত বালক মধুসূদন বসুর পুত্ত্রের উপর গিয়া পড়িল। এই জন্য ঐ বালককে আনন্দ বাবুর সহধর্ম্মিণী বলিতেন “তুই আমাদের বংশধর, আর সকলে বয়ে গিয়েছে, তুই কেবল বংশের নাম রাখিবি।” আনন্দ বাবু আহার বিষয়ে জাতিভেদের বিচার করিতেন না। খানা খাওয়ার একটা স্রোত রামমোহন রায় হইতে বাহির হয়, আর একটী স্রোত ডিরোজিওর শিষ্যদিগের নিকট হইতে বাহির হয়, উভয় স্রোত পরস্পর মিলিত হইয়া পরে প্রবলবেগে হিন্দু সমাজে
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
৬৯
