খাস কমিসন হইত। খাস কমিসন সদর দেওয়ানির অঙ্গ ছিল বলিলেই হয়। মুন্সী আমির আলি উভয় সদর দেওয়ানী ও খাস কমিসনে ওকালতি করিতেন। আনন্দ বাবুর সহিত মুন্সী আমিরের অত্যন্ত বন্ধুতা জন্মিয়াছিল। মুন্সী সাহেব আনন্দ বাবুকে “রাজদারদোস্ত” বলিতেন। যে বন্ধুকে গোপনীয় কথা বলা যাইতে পারে পারসীতে তাহাকে রাজদারদোস্ত বলে। প্রায় প্রতিদিন মুন্সি আমির আলির বাটী হইতে আনন্দ বাবুর বাসায় প্রকাণ্ড একটা টিনের বাক্স আসিত। রামনারায়ণ বাবু মনে করিতেন যে মুন্সী আমির তাঁহার পিতাকে তরজমা জন্য সদর দেওয়ানীর কাগজপত্র পাঠাইয়া দিয়া থাকেন। একদিন সন্ধ্যার পর রামনারায়ণ বাবুকে একটা ঘরের ভিতর ডাকিলেন, ডাকিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করিয়া দিলেন। রামনারায়ণ বাবু প্রথমে বুঝিতেই পারিলেন না যে ব্যাপারটা কি। তাহার পর দেখিলেন যে আনন্দ বাবু একটী দেরাজ খুলিয়া একটা কর্কস্ক, একটা শেরির বোতল ও একটী ওয়াইনগ্নাস বাহির করিলেন, তৎপরে প্রকাণ্ড টিনের বাক্সটী খুলিলেন। টিনের বাক্স খোলা হইলে, রামনারায়ণ বাবু দেখিলেন যে তাহাতে সদর দেওয়ানির কাগজ নাই, পোলাও কালিয়া, কোপ্তা রহিয়াছে। আনন্দ বাবু রামনারায়ণকে বলিলেন, “তুমি প্রত্যহ সন্ধ্যার পর আমার সঙ্গে এই সকল উত্তম দ্রব্য আহার
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
