আর সম্মুখে কোপ্তার প্লেট আর বীয়র সরাপের বোতল রহিয়াছে, ইহার একটী উত্তম ছবি হইতে পারে। রামনারায়ণ বাবু অভিনব ব্রাহ্মধর্ম্ম অবলম্বন করিয়াও কিছু দিন মদ খাইতেন, তৎপরে ছাড়িয়া দেন। তেইস বৎসর হইল মদ্যপান একেবারে ছাড়িয়া দিয়াছেন। আনন্দ বাবুর যাবনিক আহার বিষয়ে অন্যান্য অনেক অপূর্ব্ব কাহিনী শুনা যায়। মুন্সী উজীর আলি নামে আনন্দ বাবুর একটী কানপুর নিবাসী মুন্সী ছিল, তিনি তাঁহাকে পারসী কাগজ পত্র অনুবাদ করিতে সাহায্য করিতেন। মুন্সী সাহেব প্রত্যহ টিনের কৌটা করিয়া তাঁহার প্রভুর জন্য মুরগির ডিম অর্দ্ধসিদ্ধ করিয়া তাহার উপর লবণ ও মরিচের গুঁড়া ছড়াইয়া আনিতেন। একদা তিনি এই কৌটা রাখিয়া নীচে প্রস্রাব করিতে গিয়াছিলেন এই অবসরে রামনারায়ণ বাবুর নিতান্ত বালক জোঠতুত ভাই যাঁহার উপর বাৎসরিক শ্রাদ্ধ করিবার ভার অর্পিত ছিল এবং যাঁহাকে তাহার কাকী “বংশধর” বলিয়া ডাকিতেন— ঐ কৌটা লইয়া নিকটস্থ স্নানাগারের মধ্যে লইয়া গিয়া কৌটার অন্তর্গত কয়েকটী ডিম্ব—কি পদার্থ না জানিয়া উত্তম খাদ্য মনে করিয়া কপাকপ্ খাইয়া টিনের কৌটা যেমন বন্ধ ছিল সেইরূপ বন্ধ করিয়া আবার রাখিয়া দিলেন। পরদিবস আনন্দ বাবু ডিম পায়েন নাই বলতে মুন্সী সাহেব বিস্ময়ান্বিত হইলেন। তৎপরে কে খাইল
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
