অনুসন্ধান পড়িয়া গেল। কিন্তু তাহা যে “বংশধর” খাইয়াছিলেন তাহা কেহ অনুভব করিতে পারিলেন না। অবশেষে কিছুই মীমাংসা করিতে না পারিয়া মুন্সী সাহেব স্থির করিলেন যে শয়তানে খাইয়াছে। এক্ষণে যেমন কলিকাতার অত্যন্ত গোঁড়া হিন্দুর বাটীতে পর্য্যন্ত কেহ পিয়াজ ব্যবহার করিতে সঙ্কোচ বোধ করে না, সেকালে সেরূপ ছিল না। পিয়াজ খাওয়া হয় ইহা লোকে যাহাতে টের না পায়, এমত উপায় অবলম্বন করা হইত। যেদিন আনন্দ বাবুর সহধর্ম্মিণীকে মাংসে পিয়াজ দিতে হইত সেদিন আনন্দ বাবু রামনারায়ণ বাবুকে বলিতেন যে আজ তোমার মাকে মাংসে (Cepa) দিতে বলিয়া আইস। সিপা শব্দ লাটিন ভাষায় পিয়াজ বুঝায়। লাটিন ভাষায় ঐ শব্দ পিয়াজ বুঝায় রামনারায়ণ বাবু লাটিন অভিধান খুঁজিয়া তাঁহার পিতাকে বলিয়া দিয়াছিলেন। আমরা উপরে উল্লিখিত মুন্সী উজীর আলি বিষয়ে দুই একটা গল্প বলিয়া আনন্দ বাবুর বৃত্তান্ত সমাপন করিব। রামনারায়ণ বাবু, তাঁহার পিতার মৃত্যুর পর দিনকয়েক সংস্কৃত কালেজের দ্বিতীয় ইংরাজী শিক্ষকের কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। একদিন পড়াইতেছেন এমন সময়ে মুন্সী সাহেব আসিয়া উপস্থিত। তিনি গোপনে রামনারায়ণ বাবুকে ডাকিয়া বলিলেন, “আমি কানপুর যাইতেছি, আর কলিকাতায় আসিব না। আমি তোমাকে তোমার পিতার হস্তে লিখিত
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান
৭৫
