পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
গ্ৰাম্য উপাখ্যান

 “আমি বাটীতে আসিয়া প্রথম যখন আমার প্রাচীন সমবয়স্ক বৃক্ষগুলিকে (my old contemporary trees[]) দেখিলাম তখন মন কি পর্য্যন্ত উদ্বেলিত হইল তাহা কি বলিব? এই সকল বৃক্ষতলে কত ক্রীড়া কৌতুক করিয়াছি, কত প্রকার আমোদ প্রমোদে কাল যাপন করিয়াছি, এই সকল বৃক্ষতলে বসিয়া কত ভাবী সুখের ছবি আঁকিয়াছি, শূন্যে রামধনুর বর্ণে চিত্রিত কত শোভন অট্টালিকা নির্ম্মাণ করিয়াছি, তাহা কি বলিব? পৃথিবীর যে ভাগে আমি ভ্রমণ করি না কেন তাহার চিত্র আমাদিগের মন হইতে কখনই অন্তর্হিত হইবে না। জন্মেনী দেশীয় জ্ঞানী কেণ্ট (Kant) তাঁহার ঘরের যে জানালার নিকট বসিয়া গ্রন্থ রচনা করিতেন সে জানালার সম্মুখে অন্যের ভূমির উপর স্থিত একটী প্রকাণ্ড বৃক্ষ ছিল, যখন শুনিলেন ভূস্বামী সেই বৃক্ষটী ছেদন করিতে চাহেন তখন তাঁহার মহাবিপদ জ্ঞান হইল। তিনি ভূস্বামীকে অনেক অনুরোধ করিয়া সেই বৃক্ষ রক্ষা করিলেন। কেণ্ট কি জন্য ঐ বৃক্ষটির বিনাশ মহাবিপদ জ্ঞান করিয়াছিলেন তাহা আমি এখন বুঝিতে পারিতেছি। আমি বাটীতে আসিয়া সে কালের স্কুলমাষ্টার কৃষ্ণমোহন বসুর পুত্রের নিকট বাটীর চাবি চাহিয়া পাঠাইলাম। চাবি আনিবার পূর্ব্বে যখন গ্রামের বায়ু আমার গাত্র স্পর্শ করিতে


  1. Cowley.