পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
৮৯
* * *

অর্থলোভী পিতামাতা অর্থের কারণ।
পুস্তক পেষণী যন্ত্রে করিয়া পেষণ॥ 
সুকুমার শিশু বৃন্দে কি বলিব হায়!
কেবল অর্থের জন্য পরকাল যায়॥

 তৎপরে যে বৈঠকখানা ঘরে আমার খুড়া মহাশয় হরিহর বসু বসিতেন সে ঘরে আসিলাম। পূর্ব্বে এই ঘরে ঢুকিবামাত্র মধ্যম নারায়ণ তৈল ও আয়ুর্বেদোক্ত ঔষধের কত বিচিত্র গন্ধ অনুভব করা যাইত; তিনি এই ঘরে বসিয়া শাস্ত্রের কত শ্লোক আবৃত্তি করিতেন ও সে কালের গল্প করিতেন। এই ঘরে প্রাতঃকাল হইতে রাত্রি দশটা পর্য্যন্ত কত লোকের সমাগম হইত। এই ঘরে কত শাস্ত্রালাপ কত ক্রীড়া কৌতুক হইত। ইহা গ্রামের ক্লব স্বরূপ ছিল। কেবল প্রত্যহ দুই তাল তামাক খরচ করিতে হইত মাত্র তাহাতেই গ্রামের সকল লোক বশীভূত। তাহাদিগের সরলাত্মাকে বশ করিবার জন্য বেশী কিছু আবশ্যক হইত না। সদর বাটী পরিত্যাগ করিয়া বাটীর ভিতর প্রবেশ করিলাম। এই বাটীর ভিতরের পূবের ঘর খড়ো ও দক্ষিণের দীর্ঘ ঘর পাকা, তাহাতে অনেক কুঠরী আছে। এই পূবের ঘরের দাওয়াতে গ্রামের ভঞ্জ বংশের কন্যা আমার বৃদ্ধ অন্ধ পিতামহী (আমার ঠাকুরের জেঠাই) বসিয়া আমাদিগের নিকট সিংহির মামা ভম্বোল দাসের গল্প